কোটা আন্দোলনকারীদের আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা শুনেছি, তাঁরা (কোটা আন্দোলনকারী) উচ্চ আদালতের যে মামলা চলছে, তাঁদের পক্ষ থেকে আইনজীবী নিয়োগ করেছেন এবং আদালতে যথাসময়ে হাজির হবেন। এটা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। এ জন্য ধন্যবাদ জানাই।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যৌথ সভায় এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

শোকের মাস আগস্টের দলীয় কর্মসূচি ঠিক করতে এই যৌথ সভার আয়োজন করা হয়। ওবায়দুল কাদের সূচনা বক্তব্য দেওয়ার পরে ২০ মিনিটের মতো এই যৌথ সভা চলে বলে সূত্রে জানা গেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা যতটুকু জানি, কোটা সংস্কারের যে আন্দোলন শিক্ষার্থীরা করছেন, আজকে তাঁদের নির্ধারিত কোনো কর্মসূচি নেই। সে জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।’

আন্দোলনকারীরা কোটা সংস্কার চান বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘যখন তাঁদের প্রতিনিধি আইনজীবী কোর্টে প্রতিনিধিত্ব করবেন, তাঁদের কথা কোর্ট শুনবেন, সরকারপক্ষের কথাও শুনবেন। সব পক্ষের কথা শুনে দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেবেন, এটাই আমরা আশা করি। ওই পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করব।’

দেশে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন ও সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের আন্দোলনে বিএনপির সমর্থনকে দুরভিসন্ধি বলেন ওবায়দুল কাদের। ‘অরাজনৈতিক’ এই আন্দোলনে উসকানি দিয়ে সারা দেশে যাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে দলীয় নেতা–কর্মীদের সতর্ক পাহারায় থাকার নির্দেশনা দেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটা ব্যাপারে আমাদের সতর্কতা—এটা অবশ্যই রিলেটেড বিষয়, অরাজনৈতিক আন্দোলন, শিক্ষকদের আন্দোলনও অরাজনৈতিক এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনও অরাজনৈতিক। এ অরাজনৈতিক আন্দোলনে বিএনপি ও তাদের সমমনাদের রাজনৈতিক সমর্থন নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এই অশুভ মহলটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উসকানি ও ইন্ধন দিয়ে যাতে সারা দেশে বিশৃঙ্খলার আবহ না দিতে পারে, সে জন্য সারা বাংলাদেশে, রাজধানীতে—সর্বত্র সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে। সেটা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।’

আরও পড়ুন

ছাত্রলীগকে সতর্কভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার নির্দেশনা দিয়ে কাদের বলেন, ‘কোনো অবস্থায়ই উসকানি দেওয়া যাবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও নেত্রী নির্দেশ দিয়ে গেছেন, যেন তাদের পক্ষ থেকেও উসকানি না দেওয়া হয়।’

চাকরিতে কোটার বিষয়ে আওয়ামী লীগ কি সরকারের পক্ষে, নাকি আদালতের পক্ষে, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার সরকারের পক্ষে, আওয়ামী লীগও সরকারের পক্ষে।’

শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সমাধান অচিরেই হয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

আরও পড়ুন

আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বসার কথা ছিল, সেটা কবে বসবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসব আমরা কি বলেছি?’ পরে সাংবাদিকেরা, শিক্ষকেরা বলেছেন, এমন উত্তর দিলে তিনি বলেন, ‘এখন তারা কী বলল, সেটা তো আমাদের দেখার বিষয় নয়।’

সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।