বিএনপির মুখে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা হাস্যকর: তথ্যমন্ত্রী

রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ছবি: বাসস

বিএনপি নেতাদের মুখে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

বিএনপির ২৭ দফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিল, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল আর ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করেছিল, সেই বিএনপি নেতাদের মুখে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা হাস্যকর।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি অডিটরিয়ামে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় হ্যাকাথন ‘কোড সামুরাই’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ–সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কার বলে তারা যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে, সেটা আমি দেখেছি। ১৩ নম্বর প্রস্তাবে আছে—দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো আপোস করা হবে না।

যারা পরপর পাঁচবার দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, যাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দুর্নীতির দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত, তারা যখন এ সমস্ত কথা বলে, তখন মানুষ হাসে, গাধাও হাসে। খন্দকার মোশাররফ সাহেব তো ছাত্রলীগ করতেন। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য রাজনীতির কাকরা সমবেত হয়ে বিএনপি গঠন করেছিল। এই উচ্ছিষ্ট গ্রহণকারী নেতারা যখন রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলে, তখন সেটি হাস্যকর ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়।’

ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কোনো বিরূপ মন্তব্য নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাঁরা বক্তব্য দিয়েছেন। তবে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের জেনেভা কনভেনশন মেনে বক্তব্য দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের রাজনৈতিক বিষয়গুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখনকার বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের বা ১৯৭৬-৭৭ সালের কিংবা ১৯৮২-৮৩ সালের বাংলাদেশ নয়। বাংলাদেশ এখন ২০২২ সালের বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে এখন বাজেট প্রণয়নের জন্য প্যারিস কনসোর্টিয়ামের মিটিংয়ে ছুটে যেতে হয় না। আমাদের বাজেট আমরাই প্রণয়ন করি, সুতরাং বিদেশিদের নাক গলানোর কোনো সুযোগ নেই।’

এর আগে মন্ত্রী ঢাবি কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ এবং সফটওয়্যার সংস্থা বিজেআইটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘কোড সামুরাই’ ২৪ ঘণ্টার হ্যাকাথন উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লবে পিছিয়ে পড়লেও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে পিছিয়ে পড়েনি। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বহু দেশের আগে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছি এবং তা বাস্তবায়িত হয়েছে। পাশাপাশি শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নয়, আমাদের সরকার দেশকে একটি মানবিক রাষ্ট্র এবং সামাজিক কল্যাণরাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে চায়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হাফিজ মো. হাসান বাবু, ওয়ানপ্রুফ ইনকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী ইজুমি হিরায়ামা, মারুবেনি করপোরেশন ঢাকার মহাব্যবস্থাপক হিকারি কাওয়াই, কোড সামুরাই কমিটি সদস্য ইয়াসুহিরো আকাশি এবং ঢাবির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন মো. তারিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। প্রাথমিক পর্বের পাঁচ শতাধিক প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে বাছাই হয়ে আসা দেড় শতাধিক প্রতিযোগী হ্যাকাথনের চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিচ্ছে।