খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে হলে তাঁকে আবার জেলে যেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে এখন যে সাজা স্থগিত করে তাঁকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি, তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আবার তাঁকে জেলে যেতে হবে, আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে তাঁকে অনুমতি নিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান শতরূপা বড়ুয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওয়াশিংটন সফরের সময় ওই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এই সাক্ষাৎকারের ভিডিও ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
তাতে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ভয়েস অব আমেরিকার প্রশ্ন ছিল, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতির খবর আমরা পাচ্ছি। তো তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি আপনারা কি পুনর্বিবেচনা করবেন?’
প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জিজ্ঞেস করি, পৃথিবীর কোন দেশে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পেরেছে। পৃথিবীর কোনো দেশ দেবে? তাঁদের যদি চাইতে হয়, আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এখানে আমাদের কোনো আদালতের কাজের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।’
একই প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘তবে হ্যাঁ যেটুকু করতে পেরেছি তাঁর জন্য, সেটা হচ্ছে, আমার যেটুকু সরকার হিসেবে ক্ষমতা আছে, সেখানে তাঁর সাজাটা স্থগিত করে তাঁকে বাড়িতে থাকার পারমিশনটা দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা...। সে নিজেই চিকিৎসা নিচ্ছে এখন। বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর যদি তাদের যেতে হয় বাহিরে, তাহলে এখন যে তাকে আমি বাসায় থাকার পারমিশনটা দিয়েছি, এটা উইথড্রো (প্রত্যাহার) করতে হবে। তাকে আবার জেলে যেতে হবে। এবং কোর্টে যেতে হবে। কোর্টের কাছে আবেদন করতে হবে। কোর্ট যদি রায় দেন, তখন সে যেতে পারবে। এটা হলো বাস্তবতা।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে যখন সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে, তখন একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকার বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য এল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ৫২ দিন ধরে ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার। গত মার্চ মাসে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়।
সর্বশেষ ১২ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।