বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির দায় জনগণের কাঁধে চাপানো হচ্ছে

রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবি কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর নেতাদের যৌথ সভায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়
ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাম গণতান্ত্রিক জোট। বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের পাশাপাশি নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়াও বন্ধের দাবি জানিয়েছে তারা। সিপিবি ও বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছে, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির দায় জনগণের কাঁধে চাপানো হচ্ছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।

বুধবার এক বিবৃতিতে সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) বলেন, ভুলনীতি ও কমিশনভোগীদের সুযোগ দেওয়ায় বিদ্যুৎ খাতে বড় আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে। দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা রোধ করে বিদ্যুৎ খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। অথচ এটি না করে জনগণের কাঁধে এই বোঝা চাপানো হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান চড়া মূল্যস্ফীতির সময়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। মাসের খরচ, উৎপাদন খরচসহ সব খাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ার প্রভাব পড়বে। সাধারণ মানুষকে কম খেয়ে বেঁচে থাকতে হবে।

বিদ্যুৎ খাতের সব চুক্তি পর্যালোচনা, রেন্টাল, কুইক রেন্টালসহ অপ্রয়োজনীয় কেন্দ্র বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সিপিবির নেতারা।

এদিকে বাম জোটের নেতারা বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক ও গণবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁরা বলেন, রোজার আগেই চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি, ছোলাসহ নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েছে। বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার দাবি জানান তাঁরা। গ্রাম ও শহরের নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের জন্য রেশনিংব্যবস্থা চালুরও দাবি জানান নেতারা।

বুধবার বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর নেতাদের এক যৌথ সভায় নেতারা এসব কথা বলেন। সিপিবি কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন বাম জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের নেতা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা প্রমুখ।

সভা থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, ভোট ডাকাতির সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্দলীয়  সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনপদ্ধতি চালুসহ নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানানো হয়। এসব দাবিতে ১৮ মার্চ ঢাকার শাহবাগে বাম জোট সমাবেশ করবে।

মঙ্গলবার রাতে সরকার নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। ভোক্তাপর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। মার্চ মাসের বিদ্যুতের বিলেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে। এর আগে গত জানুয়ারিতে দুই দফায় বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। এটি জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দুই ভাগে কার্যকর হয়েছে। সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপনে খুচরা পর্যায়ে ৫ শতাংশ এবং পাইকারি পর্যায়ে ৮ শতাংশ বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম।