ভোটের হার সবচেয়ে বেশি গোপালগঞ্জ–৩ এ, কম ঢাকা–১৫ আসনে

ভোট দিচ্ছেন এক নারীপ্রতীকী ছবি: এএফপি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪১ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। আজ সোমবার সিইসি কাজী হাবীবুল আউয়াল এ তথ্য জানান।

গতকাল সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ হয়। মোট ২৯৯টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়। এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ–২ আসনের ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়ে যায়। এ ছাড়া ময়মনসিংহ–৩ আসনের ফলাফলও স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ২৯৮টি আসনের ফল ঘোষণা করেছে। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ ২২২টি আসন পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৬২টি আসন। জাতীয় পার্টির প্রাপ্ত আসনসংখ্যা ১১। আর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি একটি করে আসন পেয়েছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দল। তাই এ নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ কতটুকু হচ্ছে, তা একটি আগ্রহের বিষয় ছিল।

নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। আজ নির্বাচন কমিশন ২৯৮টি আসনের ফলাফল তুলে ধরেছে। সে অনুযায়ী ভোটে ২৯৮টি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮৭ দশমিক ২৩ শতাংশ ভোট পড়েছে গোপালগঞ্জ–৩ আসনে। এ আসনে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯৬২ ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন একতারা প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির এম নিজাম উদ্দিন লস্কর।

এবারের নির্বাচনে ভোট পড়ার হারের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে আছে গোপালগঞ্জ–২ আসন। এই আসনে ভোট পড়েছে ৮৩ দশমিক ২০ ভাগ ভোট।

সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ঢাকা–১৫ আসনে। রাজধানী ঢাকার এ আসনে ভোট পড়েছে ১৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এ আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদার। তাঁর পাওয়া ভোটের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৬৩২। আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির মো. সামছুল হক। তিনি ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৪৪টি।

শুধু ঢাকা–১৫ আসনে নয়, রাজধানীতে জাতীয় সংসদের যে ১৫টি আসন আছে, সব কটিতেই ভোট পড়ার হার বেশ কম। এই ১৫টি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে ঢাকা–১২ আসনে। এ আসনে জিতেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তাঁর পাওয়া ভোটের সংখ্যা ৯৪ হাজার ৬৭৯। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির খোরশেদ আলম। তিনি পেয়েছেন ২ হাজার ২১৯ ভোট।

ঢাকা নগরীর আসনগুলোর মধ্যে ঢাকা–১৫ এর পরেই কম ভোট পড়েছে ঢাকা–১৭ আসনে। এখানে ১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ আসনে জিতেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি ৪৮ হাজার ৫৯ ভোট পেয়েছেন। আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কুলা মার্কা নিয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী মো. আইনুল হক পেয়েছেন ১ হাজার ৩৮০ ভোট।

ঢাকার আসনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকা–৪ এর স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের মো. আওলাদ হোসেন। তাঁর পাওয়া ভোটের সংখ্যা ২৪ হাজার ৭৭৫। আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সানজিদা খানম। তিনি পেয়েছেন ২২ হাজার ৫৭৭ ভোট।

ঢাকায় সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে ঢাকা–৫ আসনে। এখানে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লা সজল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৬৩১ ভোট। আর এখানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হারুনর রশীদ মোল্লার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৫০ হাজার ৩৩৪।