সিপিডি-টিআইবি কী বলল, তাতে মাথাব্যথা নেই: ওবায়দুল কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অপ্রদর্শিত অর্থ ব্যাংকে আনার ব্যবস্থা করছি। ব্যাংকে আসলে করের সুবিধা আরও বাড়বে।’ তিনি বলেন, ‘এখন সিপিডি কী বলল, টিআইবি কী বলল, সুজন কী বলল—এসব নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ওরা সবাই বিএনপির সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলে। কথার সঙ্গে তাদের বাস্তব কর্মকাণ্ডে মিল নেই।’
প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, এবারের বাজেটে সরকার মুনশিয়ানা দেখাতে পারেনি। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এটা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এর প্রতিক্রিয়ায় কথাগুলো বলেন ওবায়দুল কাদের।
আজ শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় আমরা অর্থনীতির মূল ধারায় আনার ব্যবস্থা করছি। এর ফলে ব্যাংকিং সিস্টেমে অর্থপ্রবাহ বাড়বে। অনেকের হাতে গোপনে থাকা টাকা উদ্ধার করতে বাজেটে কালোটাকা সাদার করার সুযোগ রাখা হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘অবৈধ কাজের শাস্তি মওকুফের সুযোগ নেই। যেটা ফৌজদারি অপরাধ। সেটার বিচার প্রচলিত আইনেই হবে। অন্যদের মাধ্যমে কর রিটার্ন তৈরিসহ বিভিন্ন কারণে অনেকের রিটার্নে সব সম্পদের বিবরণ থাকে না। এসব ভুল সংশোধন করার সুযোগ থাকতে হবে।’ অপ্রদর্শিত অর্থ ও সম্পদ মূল ধারায় এনে ভবিষ্যতে তার ওপর আয় থেকে সরকার রাজস্ব আদায় অধিক পরিমাণে বাড়াতে চায় বলেও জানান এই নেতা।
বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেরাই হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন লন্ডনে বসে আরাম–আয়েশে দিন যাপন করছেন। সেই টাকার হিসাব মির্জা ফখরুল সাহেবদের দিতে হবে।
বাজেট নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি আজকে বড় বড় কথা বলে। অর্থবাজারের কথা বলে। কালোটাকার কথা বলে। দেশকে গিলে খাওয়ার কথা বলে। তাদের সর্বশেষ বাজেট ছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকা। তারপরও বাজেটের আগে সাইফুর রহমান সাহেবকে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ফোরামে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দৌড়াতে হয়েছিল। আমাদের সময়ে বাজেট দেওয়া আগে কোনো অর্থমন্ত্রীকে বিদেশে গিয়ে ভিক্ষা চাইতে হয়নি। এতে বুঝতে পারেন দেশটা কোথা থেকে কোথায় আসছে।’
মূল্যস্ফীতি দৃঢ়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বর্তমান সরকারের বিভিন্ন অংশের সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হব। এই বাজেটে মানুষের মৌলিক অধিকার, কৃষি, দেশীয় শিল্প ও সামাজিক নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এটা দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করবে।’
আওয়ামী লীগের যেসব নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে, সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিক) যাদের দুর্নীতিবাজ ভাবছেন তাদের তালিকাটা দেন, আমরা দুদককে বলব তদন্ত করতে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।