রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবির প্রসঙ্গসহ তিন বিষয়ে আলোচনা

বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা বৈঠক করেন। গুলশান, ঢাকা, ৪ নভেম্বরছবি: বিজ্ঞপ্তি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য চেয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। তারা মনে করে, রাষ্ট্রপতি যদি অবৈধ হয়ে যান, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারও অবৈধ হয়ে যাবে। সুতরাং এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া এ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

নুরুল হক বলেন, রাষ্ট্রপতিকে কেন্দ্র করে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না। তিনি গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে বলেন, বিগত ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনটি নির্বাচনে জনগণ ভোটের বাইরে রেখেছে। তাই আগামী তিনটি নির্বাচনে তাদের ভোটের বাইরে থাকাই উচিত। কিন্তু আমরা সে দিকে না গিয়ে আইনের মাধ্যমের একটা বাস্তবায়ন চাই যে গণহত্যায় জড়িত রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের নিষিদ্ধ করা।

অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাসেও গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগ ও তার দোসর তিন হাজার অপরাধীকেও গ্রেপ্তার করতে না পারায় তিনি সরকারের সমালোচনা করেন।

গণ-অভ্যুত্থানের একক কৃতিত্ব বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নয় বলে মন্তব্য করেন নুরুল হক। তিনি বলেন, অনেকই হয়তো ভাবছেন কিংবা মনে করছেন, ছাত্ররাই বোধ হয় অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দিয়েছে। অভ্যুত্থান এত সহজ কাজ ছিল না। অনেকে বলেছেন একেবারে নিখুঁত পরিকল্পনা ছিল। পরিকল্পনা করে পৃথিবীর কোনো দেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়নি। গত দেড় দশকে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরে যে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে, সেখানে বিএনপি সবচেয়ে ভুক্তভোগী। জামায়াত, গণ অধিকার পরিষদ আরও অনেকে নির্যাতিত।

রাশেদ খান বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যদি অবৈধ হয়ে যান, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারও অবৈধ হয়ে যান। সে ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য ছাড়া রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হলে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের আহ্বান হলো এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য ঐকমত্য সৃষ্টি করা, জাতীয় সংহতি সৃষ্টি করে রাষ্ট্রপতি ইস্যুটিতে সমাধানে আসা।’

রাশেদ খান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সংস্কার ও তাদের মেয়াদকাল নিয়ে রোডম্যাপ প্রকাশের দাবি জানান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে দূরে রেখে কোনোভাবেই সংস্কার করা সম্ভব নয়। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে আনার আহ্বান জানান।

সভায় বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু। আর গণ অধিকার পরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, উচ্চতর পরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতেমা তাসনীম প্রমুখ।