অসুস্থ রওশন এরশাদকে ঘিরে জাপায় নতুন তৎপরতা
ব্যাংককে চিকিৎসাধীন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদকে ঘিরে নতুন তৎপরতা শুরু হয়েছে দলে। এর অংশ হিসেবে আগামী ২৬ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় দশম সম্মেলন উপলক্ষে আট সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেছেন রওশন। কমিটিতে রওশন নিজেকে আহ্বায়ক ও দলের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম মসীহকে সদস্যসচিব করেছেন। তবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এই সম্মেলন আহ্বানকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী বলে দাবি করেছেন।
জাপার ছয়জন কো-চেয়ারম্যান—আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন, মুজিবুল হক ও সালমা ইসলামকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়ে বুধবার রওশন এরশাদের নামে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় পার্টির গঠনতান্ত্রিক ক্ষমতাবলে এই সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছেন রওশন এরশাদ। তিন পৃষ্ঠার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির এক জায়গায় বলা হয়, ‘জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পার্টিকে প্রস্তুত ও শক্তিশালী করতে হবে।’
এমন প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের পক্ষে তাঁর প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালীও গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, জাতীয় পার্টির সম্মেলন আহ্বান করে রওশন এরশাদ যে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছেন, তা সম্পূর্ণ অবৈধ, অনৈতিক ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষকের এ ধরনের কোনো এখতিয়ার নেই। সম্মেলনে গঠিত একটি বৈধ কমিটি ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ছাড়া আর কারও নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ধারা ১২, উপধারা ১/২ অনুযায়ী কাউন্সিলের তারিখ, স্থান ও সময় প্রেসিডিয়াম কর্তৃক নির্ধারিত হবে। তা ছাড়া জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান দলের প্রেসিডিয়ামের সভাপতি। সম্মেলনের জন্য তাঁর অনুমোদনের প্রয়োজন। এর বাইরে কাউন্সিল আহ্বানের এখতিয়ার কারও নেই।
প্রসঙ্গত, জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এখনো সুস্থ হননি। তিনি ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আট মাস পর রওশন এরশাদ গত ২৭ জুন দেশে আসেন। আট দিন ঢাকার একটি হোটেলে থেকে তিনি আবার ওই হাসপাতালে ফিরে যান। তাঁকে দেশে আনেন জাপা থেকে বিচ্যুত ও বহিষ্কৃত কয়েকজন নেতা। ব্যাংকক যাওয়ার আগে ২ জুলাই রওশন রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে ওই নেতাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা ডাকেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠ নেতাদের বয়কটের মুখে সে চেষ্টা ভেস্তে যায়।
জাপার দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল রওশন এরশাদকে দিয়ে দলের শীর্ষ নেতা জি এম কাদেরের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, যাতে তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। নতুন করে সম্মেলন আহ্বান এবং কমিটি গঠন দল থেকে বিচ্যুত ও বহিষ্কৃত নেতাদের অপতৎপরতা বলে জানান নেতারা।