দুর্নীতি নিয়ে বিএনপির বক্তৃতাই বড় কৌতুক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদছবি: বাসস

‘দুর্নীতি নিয়ে বিএনপির বক্তৃতাই সবচেয়ে বড় কৌতুক’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

বাংলাদেশ-সৌদি আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে ‘পলিটিক্যাল কনসালটেশন’ শেষে রিয়াদ থেকে আজ বুধবার দুপুরে দেশে ফেরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘ফরেন সার্ভিস একাডেমি জার্নাল’ প্রকাশনা ও ডিজিটাল লাইব্রেরি উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপির শাসনামলে দেশ দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তাঁদের মুখে দুর্নীতি নিয়ে বক্তৃতা বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবস্থান নিয়ে  কথা বলা—এটিই সবচেয়ে বড় কৌতুক।

সৌদি বিনিয়োগ ও শ্রমশক্তি রপ্তানি

সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক ও বিনিয়োগ নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সঙ্গে শ্রমশক্তি রপ্তানির সম্পর্ক বহু আগেই উন্নয়ন অংশীদারত্ব, বিনিয়োগসহ বহুমাত্রিক রূপ নিয়েছে। দেশে সৌদি বিনিয়োগ আছে এবং তারা আরও বিনিয়োগ করতে চায়। সৌদি আরব বাংলাদেশে এক হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করবে, চট্টগ্রাম বন্দরে তাদের বিনিয়োগ আছে, বে-টার্মিনালেও তারা বিনিয়োগ করতে চায়, পাশাপাশি অনাবাসী বাংলাদেশি ও বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত অফশোর ব্যাংকিংসহ আমাদের এখানে “ফিন্যান্সিয়াল উইন্ডো” যেগুলো রয়েছে, সেসব ক্ষেত্রেও তাদের বিনিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরবকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং তারা ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের মিরেরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনও করেছে।’

মন্ত্রী এ সময় শ্রমশক্তি রপ্তানির তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। তিনি জানান, সৌদি আরবে এখন প্রায় ৩১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। করোনার সময় লাখ লাখ কর্মী ফেরত এসেছিলেন। কিন্তু গত তিন বছরে আবার প্রায় ১৭ লাখ বাংলাদেশি গেছেন সৌদিতে। সৌদি আরব এ ক্ষেত্রে খুব সহায়ক ছিল। এই শ্রমজীবীদের সঙ্গে দুই দেশের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যাতে প্রতারণা না করতে পারে, সে জন্য উভয় পক্ষের প্রস্তাব ও সম্মতিতে যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর

৮ থেকে ১১ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দেশের কূটনীতির মূলমন্ত্র ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের কথাও হয়েছে। চীন আমাদের বড় উন্নয়ন অংশীদার। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সফরটিও আমাদের উন্নয়নকে বেগবান করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

এর আগে ফরেন সার্ভিস একাডেমি জার্নাল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে তিনি একাডেমির ডিজিটাল লাইব্রেরি উদ্বোধন করেন।