ফ্যাসিবাদীদের ক্ষমার কোনো প্রশ্নই আসে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম সুজা। তিনি বলেছেন, ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে দেশ আবার স্বাধীন করেছে। অনেক রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদকে হটানো হয়েছে। তাই নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদীদের ক্ষমার কোনো প্রশ্নই আসে না।
চট্টগ্রামে জাতীয় নাগরিক কমিটির এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির ‘চট্টগ্রাম রাইজিং’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আজ শনিবার বিকেলে এ মতবিনিময় সভা করা হয়।
সংগঠনের চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে ‘গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা: কেমন বাংলাদেশ চাই?’ শিরোনামে আয়োজিত এ সভায় চট্টগ্রামে নাগরিক কমিটির সঙ্গে যুক্ত লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। সেখানে যোগ দেন নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য হাসান আলী খান, এস এম সুজা ও সাগুফতা বুশরা মিশমা। সাগুফতা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভার শুরুতেই জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতা কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরিচয়পর্ব শেষে শুরু হয় বক্তব্য। নাগরিক কমিটির সদস্য হাসান আলী খান স্বাগত বক্তব্য দেন। পরে নাগরিক কমিটির এস এম সুজা বলেন, ‘শেখ হাসিনা খুনি ও গণহত্যাকারী। যত দিন পর্যন্ত এই গণহত্যার বিচার না হবে, তত দিন শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে না। তাই এই বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা থামব না।’
এস এম সুজা আরও বলেন, বাংলাদেশে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে দেশ আবার স্বাধীন করেছে। তাই ভবিষ্যতে এখানে কোনো মাস্তানি চলবে না। অনেক রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদকে হটানো হয়েছে। নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদীদের ক্ষমার কোনো প্রশ্নই আসে না।
সভায় শিক্ষক মুহাম্মদ ফরহাদ ঢাকাকেন্দ্রিক বেশি উন্নয়নের মানসিকতার সমালোচনা করেন। পাশাপাশি তিনি বিকেন্দ্রীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। চট্টগ্রামের উন্নয়ন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই শিক্ষক চট্টগ্রাম বন্দরের উপযোগিতা রক্ষা এবং শহরের কাঠামোগত সংস্কারের বিষয়ও আলোচনা করেন।
ইতিহাস-ঐতিহ্য, বিজয় মেলা, ব্যান্ড সংগীতসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন শিল্পী মেরুন হরিয়াল। মুহাম্মদ ইরফান বলেন, বাহাত্তরের বাকশালি সংবিধান বহাল রেখে বাংলাদেশের জনগণের মুক্তি অসম্ভব।
সভায় গণ–অভ্যুত্থান ও পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করেন সব্যসাচী জহির। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান ফ্যাসিবাদ তৈরির সংবিধান। এ সংবিধান বাতিল করে জনগণের অভিপ্রায়ে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে।
সভায় শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, শিক্ষাঙ্গনে দলীয় প্রভাব হ্রাস, গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখা, শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি, কারিগরি শিক্ষার প্রসার, গ্রামীণ ও শহুরে শিক্ষার সমতা নিশ্চিত করা প্রভৃতি বিষয়ে কথা বলেন মুনতাসির মাহমুদ।