পতাকা বৈঠক করে ছাগল ফেরত দেওয়া শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ তামাশা: রিজভী
পতাকা বৈঠক করে বাংলাদেশের তিনটি ছাগল ফেরত দেওয়ার ঘটনাকে ‘শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ তামাশা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশের তিনটি ছাগল নাকি ভারতের সীমানার ভেতরে গেছে। পতাকা বৈঠক করে সে ছাগল ফেরত দিয়েছে বিএসএফ (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী)।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএসএফের কাছে ছাগলের দাম আছে, কিন্তু মানুষের দাম নেই। তিনটি ছাগল ফেরত দেওয়া শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর গুলশান-১ ও ২ নম্বর এলাকায় ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, দিনাজপুরের হিলি সীমান্তসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা চায়না বেগমের তিনটি ছাগল ঘাস খেতে খেতে ভারতীয় সীমান্তের ভেতরে চলে যায়। গতকাল দুপুরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি ও বিএসএফ) পতাকা বৈঠকের পর তিনটি ছাগল ফেরত পান চায়না বেগম।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আজ তামাশা করা হচ্ছে। টেকনাফ সীমান্তে মুহুর্মুহু গোলাগুলি চলছে। সীমান্তে বাংলাদেশের কৃষকেরা ভয়ে কাজ করতে পারছেন না। তাঁরা চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন আর সরকার হাতগুটিয়ে বসে আছে। একটা প্রতিবাদ পর্যন্ত করার সাহস নেই তাদের। এ পরিস্থিতি চলতে পারে না।
সারা দেশে সামাজিক নৈরাজ্য চরম আকার ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যৌন আনন্দের উৎসবে পরিণত করেছে ছাত্রলীগ। কুষ্টিয়ায় ছাত্রলীগের নেতা সজীব এক যুবককে ১০ টুকরা করার কথা নিজেই স্বীকার করেছেন। এখন শুধু বিএনপির ওপর আক্রমণ নয়, লুটের টাকা ভাগাভাগি করতে নিজেরা নিজেদের হত্যা করছে। এ পরিস্থিতির মধ্যে দেশ এক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।
রিজভী বলেন, ‘আজকে অবৈধ ও ডামি সরকার জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। দখলদার সরকার গত ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন করে মনে করেছে, তারা বাংলাদেশের জমিদার হয়ে গেছে। এ জমিদারতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই থামবে না। কারণ, এ ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হবে। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো যে আন্দোলন করছে, সেটি হলো গণতন্ত্রে ফিরিয়ে আনার লড়াই, জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই। এ লড়াই অব্যাহত থাকবে।’
এ সময় রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, তাঁতি দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব আবদুর রহিম, যুবদলের সহসভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকী প্রমুখ।
‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ শিরোনামে একটি প্রচারপত্র সারা দেশে বিতরণের মাধ্যমে গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি। ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে ‘ডামি’ আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি ছাড়াও সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করা হয় প্রচারপত্রে।
ছয় দিনব্যাপী এই কর্মসূচির আজ দ্বিতীয় দিন প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়। ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি সব উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে ছয় দিনের এই কর্মসূচি শেষ হবে। এর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদে ১৬ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে দোয়ার কর্মসূচি রয়েছে।