এত লম্বা সময় কেন, মনে হচ্ছে কোথাও কোনো ঘাপলা আছে: রিজভী
‘সংস্কারে চার বছর সময় লাগবে’ বলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বিএনপিকে ‘ভাবিয়ে’ তুলছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘কেন তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) এত লম্বা সময়ের কথা বলছেন। (সংস্কার) এটা তো এত লম্বা সময়ের কথা নয়। মনে হচ্ছে, সরকারের মধ্যে কোথাও কোনো জায়গায় ঘাপলা আছে। সরকারের মধ্যে কোথাও কোনো মাস্টারপ্ল্যান আছে কি না, এটা এখন আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।’
আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত এক কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে আজ জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের চার বছরের মেয়াদের কথা বলেননি।
রুহুল কবির রিজভী অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা সবাই, বিএনপিসহ সব গণতান্ত্রিক দল যে সরকারকে সমর্থন করেছে, সেই সরকার দেশ চালাচ্ছে। ঠিক আছে, আলাপ-আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে এগোতে হবে। কিন্তু গতকাল আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমে যে কথাটি বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা, এইখানে কিন্তু একটা বড় ধরনের প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে কাজ করছে। চার বছর লাগবে সংস্কার করতে!’
কেন? এ প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, ‘সংস্কার তো যুগে যুগে...বিপ্লব–আন্দোলনের নেতৃত্ব তো দিয়েছে রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক দলই তো তৈরি করেছে সংবিধান, সংসদ। এটা তো আমরা ইউরোপের ইতিহাসে দেখছি...ঠিক আছে, এখানকার সুশীল সমাজ বা অন্তর্বর্তী সরকার তারা একটা পরামর্শ দিতে পারে সংস্কারের। কিন্তু এই সংস্কার বাস্তবায়ন করতে চার বছর লাগবে!’
এ প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার হবে গণতন্ত্রের মডেল। তারা সেটি না করে এই যে প্রলম্বিত করা, আমার মনে হয় কোথাও যেন একটা জটিলতা হচ্ছে। গণতন্ত্রচর্চা এবং রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘...গতকালের এই কথা (প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য) আমাদের সত্যিকার অর্থে ভাবিয়ে তুলছে। এর উদ্দেশ্যটা কী, সেটা মানুষ জানতে চাইবে।’
আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিএনপির নেতা মীর হেলাল ও আশরাফউদ্দিন বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পঙ্গুত্ববরণকারী ১০ জনকে আমরা বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে হুইলচেয়ার দেওয়া হয়।