দেশে জিনিসপত্রের দাম কমছে না কেন, প্রশ্ন গণতন্ত্র মঞ্চের

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা আজ রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেনছবি: তানভীর আহাম্মেদ

দেশে জিনিসপত্রের দাম কমছে না কেন, সরকারের কাছে সেই প্রশ্ন রেখেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, সরকার রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান দখল করে নিজের দলে সম্পত্তি বানিয়ে জনগণের ওপর অত্যাচার করছে। সব জায়গায় হাহাকার। এই সরকার গ্যাস দিতে পারে না, বিদ্যুৎ দিতে পারে না, খালি লাঠি দিতে পারে।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডের বিজিআইসি ভবনের সামনে এক সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে বাংলাদেশ সরকার ও পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্বের দিকে ইঙ্গিত করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই সরকার কিছুদিন ভাব দেখাবে, দেখো—সবাই এখন আমাদের পক্ষে। ...আপনার সরকারকে ভালো বলে নাই। সেই দেশ আপনার নির্বাচনকে ভালো বলে নাই। সেই দেশ থেকে একজন এখানে এসেছেন, বাংলাদেশে ওই দেশের হয়ে চাকরি করেন, তিনিও কিছু বলেন নাই। কিন্তু সরকারের মন্ত্রী বলেছেন, হ্যাঁ, ইনি গেছেন, আমার সঙ্গে চুপি চুপি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে এসেছেন। অভিনন্দন চুপি চুপি জানানোর বিষয়?’

মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ভোটটা হয়ে যাক, সব ঠিক করে নেবেন। সব ঠিক হয়েছে? সব যদি ঠিক হয়, তাহলে জিনিসপত্রের দাম কমাতে পারলেন না কেন?’ তিনি বলেন, গ্যাস নাই, কারখানা প্রায় বন্ধ। সব জায়গায় হাহাকার। এই সরকার টাকা দিতে পারে না, ডলার দিতে পারে না, গ্যাস দিতে পারে না, ভোট দিতে পারে না, বিদ্যুৎ দিতে পারে না, খালি লাঠি দিতে পারে।

বিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না তোপখানা রোডে বিজিআইসি ভবনের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ১৯ অক্টোবর
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে জনগণ নতুন করে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, সরকার রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান দখল করে নিজের দলে সম্পত্তি বানিয়ে জনগণের ওপর অত্যাচার করছে। সেই কারণে মানুষের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামবে একটু সময় লাগছে। জনগণ সরকারকে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে দেবে না। ক্ষমতা থেকে নামতেই হবে। নতুন নির্বাচন দিতে হবে।

সরকার ভয় পেয়ে ‘ডাবল প্রটেকশন’ নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদের ৩৪৮ জন সংসদ সদস্য এখনো বহাল আছে। আর এবারকার ২৯৮ জন সংসদ সদস্যকেও বহাল রাখা হয়েছে। একসঙ্গে প্রায় সাড়ে ৬০০ সংসদ সদস্য বহাল আছে। কোনো আইন, সংবিধান, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে এই সরকার ধার ধারে না। এই সরকার আগামী পাঁচ বছর টিকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, এই সরকার যে আইনের অধীনে নির্বাচন করেছে, সেই আইনের অধীনে নতুন সরকারের আসলে কার্যভার গ্রহণ করার জন্য আগের সরকারের সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার জন্য ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। এটা তারা না করে, তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের কয়েক দিনের মধ্যে তাঁরা শপথ নিয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ শপথ নিয়েছে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেএসডির স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. সিরাজ মিয়া ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল বিশ্বাস।