গভীর রাতে ফখরুল-আব্বাসকে আটক রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ: খন্দকার মোশাররফ
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে গভীর রাতে আটকের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সাদাপোশাকের পুলিশ আটক করেছে বলে দল ও পরিবার জানিয়েছে। এ নিয়ে খন্দকার মোশাররফ আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোর কাছে প্রতিক্রিয়া জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘দেশের বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক দলের মহাসচিবকে, স্থায়ী কমিটির এক সদস্যকে এভাবে রাতে বাসা থেকে আটকের তীব্র নিন্দা জানাই। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই জ্যেষ্ঠ সদস্য বলেন, যেখানে সামনে নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিভিন্ন সভা-সমাবেশে ভোট চাইছেন, সেখানে বিরোধী দলের একটি গণসমাবেশ কেন্দ্র করে পরিস্থিতিকে সরকার এমন অবস্থায় নিয়ে যাবে, তা কল্পনাতীত।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘দেশে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এই সংকটের মধ্যে সরকার এত বড় একটি রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করবে, তা আমরা চিন্তাই করতে পারি না।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমরা এই সরকারের বিদায়ের জন্য, নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করছি। ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশটি আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। এটা এমন আর কি!’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই জ্যেষ্ঠ সদস্য বলেন, ‘সরকার বলছে, আমার সন্ত্রাস-বিশৃঙ্খলা করব। আমরা ৯টি সমাবেশ করেছি। সন্ত্রাস করিনি, শান্তিপূর্ণভাবেই সমাবেশ করেছি। ঢাকায়ও করব। গণতান্ত্রিকভাবে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। সরকার কেন ন্যূনতম সহনশীলতা দেখাচ্ছে না? এর পেছনে নিশ্চয়ই গভীর দুরভিসন্ধি আছে।’
প্রায় তিন মাস আগে বিএনপি ১০ বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঢাকায় গণসমাবেশ করতে বিএনপি নয়াপল্টনের জন্য অনুমতি চেয়ে গত ১৩ নভেম্বর ও ২০ নভেম্বর ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করে। আগামীকাল শনিবার ঢাকার বিএনপির সমাবেশের দিন। কিন্তু এখনো সমাবেশের স্থান বুঝে পায়নি বিএনপি।
সমাবেশস্থল নির্ধারণ নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে একজন নিহত হন। সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পুলিশের করা এসব মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ২ হাজার ৯৭৫ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। চার মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৮৫ জনকে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন।