শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করা সম্ভব

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বনানী, ঢাকা, ১৫ জুলাই
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), এ কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আজ বৈঠকে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার ব্যাপারেই তারা (ইইউ) আমাদের অঙ্গীকার চেয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমরাও বলেছি, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সম্ভব।’

আজ শনিবার রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে বাংলাদেশ সফররত ইইউর তথ্যানুসন্ধানী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকটি শুরু হয় দুপুর ১২টায়। চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান, সার্বভৌমত্ব, আইনি ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে ইইউ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারে তারা আশ্বস্ত হয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে।’

ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে বৈঠকের আগে আজ সকালে বিএনপি ও সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আলাদা আলাদাভাবে বৈঠক করেছে ইইউ প্রতিনিধিদল।
বিএনপির সঙ্গে বৈঠক নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, আমরা বললাম। বিএনপির সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে আমরা কেন বিতর্ক করতে যাব? সেটা তাদের ব্যাপার।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংলাপ নিয়ে প্রতিনিধিদল কোনো কথা বলেনি। এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা সংসদ বিলুপ্তির বিষয় নিয়েও প্রতিনিধিদল কোনো কথা বলেনি। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সংবিধান ও বিধিবিধান অনুসারে আগামী নির্বাচন হবে।

নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। এখানে পার্লামেন্ট বিলুপ্তির প্রশ্নই ওঠে না। সরকারের পদত্যাগের প্রশ্নই ওঠে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রশ্নই ওঠে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল এ বৈঠকে অংশ নেয়। অপর পক্ষে বৈঠকে অংশ নেয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ মূল্যায়ন করতে আসা রিকার্ডো চেলারির নেতৃত্বে ইইউর ছয় সদস্যের একটি প্রাক্‌-তথ্যানুসন্ধানী দল।

বৈঠক শেষে ইইউর প্রতিনিধিদলের সদস্যদের পক্ষ থেকে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কোনো ব্রিফ করা হয়নি।

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক কূটনীতিক মো. জমির, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম ও মোহাম্মদ এ আরাফাত।

এর আগে সোমবার (১০ জুলাই) ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির গুলশানের বাসায় সংস্থাটির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছিলেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির চার নেতা। ঘণ্টাখানেক ধরে বৈঠকটি চললেও এ বিষয়ে ইইউ ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি।

আরও পড়ুন

প্রসঙ্গত, শনিবার বিকেল চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত ইইউর ঢাকা অফিসে সফররত প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ মূল্যায়ন করতে ইইউর ছয় সদস্যের নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশন দল রোববার (৯ জুলাই) ভোরে ঢাকায় এসেছে। ইইউ প্রতিনিধিদলের দুই সপ্তাহের সফর ২৩ জুলাই শেষ হবে।