সাকা চৌধুরীর ছেলের স্লোগান নিয়ে বিএনপি নেতারা যা বললেন
আবার আলোচনায় এসেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী। তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ছেলে। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে হুম্মাম বক্তব্য দেন। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তাঁর দেওয়া একটি স্লোগান নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
গতকালের সমাবেশে বক্তব্যের শুরুতে হুম্মাম নিজেকে সালাহউদ্দিন কাদেরের ছেলে বলে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, ‘বেশি সময় নেব না। অনেক সিনিয়র নেতা এসেছেন। আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি, কোনো বড় নেতা হিসেবে নয়। আজকে এসেছি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হিসেবে। আপনারা সবাই সঙ্গে থাকলে আমাদের পরাজিত করার শক্তি কারও নেই।’
সরকারকে উদ্দেশ করে হুম্মাম বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বলে দিতে চাই, ক্ষমতা ছাড়ার পর একা বাড়িতে যেতে পারবেন না। প্রত্যেকটা শহীদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করব।’
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে হুম্মাম বলেন, ‘যাওয়ার আগে বাবার স্লোগান আপনাদের বলে যেতে চাই। নারায়ে তকবির, নারায়ে তকবির, নারায়ে তকবির। আমরা যখন আবার এই ময়দানে আসব, সরকার গঠন করে আসব।’
হুম্মাম যখন ‘নারায়ে তকবির’ বলে তিনবার স্লোগান দেন, তখন সমাবেশস্থলে উপস্থিতি বিএনপি ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ‘আল্লাহু আকবর’ বলে ধ্বনি দেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন সালাউদ্দিন কাদের। তাঁর ফাঁসির রায় কার্যকর হয় ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে ‘নারায়ে তকবির’ বলে স্লোগান দিতেন।
গতকাল হুম্মামের বক্তব্য দেওয়ার সময় সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমাবেশে এই স্লোগান কেউ দেননি। বক্তব্যের শুরুতে হুম্মাম কাদের বলেছেন, তিনি তাঁর বাবার স্লোগান দিচ্ছেন।’
আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বিষয়টি (নারায়ে তকবির স্লোগান) হুম্মামের ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে বিএনপির রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এটি বিএনপির স্লোগান নয়।’
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করতেন। তাঁর ছেলেও একই পথে হাঁটছেন। মানুষ এখন এগুলো বোঝে। মানুষ এখন অনেক সচেতন। তাই তাঁরা সুবিধা করতে পারবেন না।
সালাউদ্দিন কাদেরের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর তাঁর ছেলে হুম্মাম রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি এক বছর ধরে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন।