নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করার কোনো সুযোগ নেই: এবি পার্টি

নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত নিয়ে সরকারের করণীয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিছবি: এবি পার্টির সৌজন্যে

ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। আজ সোমবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত নিয়ে সরকারের করণীয় বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটি এমন কথা বলে।

পরে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত নিয়ে ১০ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।

প্রথম প্রস্তাব হলো দীর্ঘ মেয়াদে নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য বিদেশি বিনিয়োগকে কোনোভাবেই বাধা দেওয়া যাবে না। যেসব প্রকল্প এলওআই (লেটার অব ইনটেন্ট বা সরকার থেকে কাজের ইচ্ছাপত্র) পেয়েছে, সেগুলোয় ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে’ ভিত্তিতে উৎপাদন সচল করতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকল্পগুলো নবায়ন না করে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমাতে হবে।

অন্য প্রস্তাবগুলো হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানির মূল্য কমাতে সরকারি উদ্যোগে অনাবাদি খাসজমি ও চরাঞ্চলগুলোকে বাছাই করে সেখানে সঞ্চালন লাইন তৈরি করে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে; বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চারটি চরে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে সম্ভাবনা পরীক্ষা চলমান, সেটি দ্রুত শেষ করে সেখান থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে; ডিজেলচালিত লাখ লাখ সেচের মেশিনকে সোলার প্যাম্পে রূপান্তরিত করতে হবে; গ্যাস–বিদ্যুতের কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি ছাদমালিক ও বিনিয়োগকারী কোম্পানির সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে নেট মিটারিং কার্যক্রম সম্প্রসারণ করে বাড়ির ছাদে স্থাপিত সোলার থেকে হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে; দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ–চালিত গাড়ি উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে হবে, সে ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের সমন্বিত বিনিয়োগের জন্য উত্সাহিত করতে হবে; নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ব্যবহৃত সোলার প্যানেল, ইনভার্টারসহ প্রয়োজনীয় পণ্যে কর শূন্যে বা ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে; দরকার হলে বাংলাদেশকে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করে ‘এফইইডি এবং ট্যারিফ’ দিয়ে দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন বাড়াতে হবে; ভুটান ও নেপাল থেকে ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন লাইন করে কম মূল্যে জলবিদ্যুৎ আমদানি করা; অফ পিক আওয়ারে (দিনের তুলনামূলক কম ব্যস্ত সময়ে) কম মূল্যে বিদ্যুৎ ব্যাটারি স্টোরেজের মাধ্যমে মজুত করে ব্যস্ত সময়ে ব্যবহার, স্ট্যাবল ট্রান্সমিশন সিস্টেম ও চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের পদক্ষেপ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশ একটি নদীবিধৌত অঞ্চল হওয়ায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির কোনো বিকল্প নেই। এখন পরিবেশদূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক যানবাহনের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় আগামী এক দশকে বিদ্যুতের চাহিদা দ্বিগুণ হতে পারে। ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অনেক বেশি। এমতাবস্থায় ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করার কোনো সুযোগ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব এ বি এম খালিদ হাসান, এবি পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, আহমদ বারকাজ নাসির, কেফায়েত হোসেন তানভীর, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুর রব জামিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, শরণ চৌধুরী, আমেনা বেগম, সুমাইয়া শারমিন ফারহানাসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।