নেতা-কর্মীদের মুক্তির বিষয়ে পুলিশের আশ্বাস, জানালেন বিএনপি নেতা বরকতউল্লা
রাজধানীর নয়াপল্টন থেকে গ্রেপ্তার বিএনপির নেতা–কর্মীদের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করবে না পুলিশ। এমনকি পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগ থেকে তাদের জামিনের বিরোধিতাও করা হবে না। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠকে এই আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা (বুলু) জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল। সেখানে আলোচনায় নয়াপল্টন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বদলে বিএনপির সমাবেশের জন্য নতুন দুটি স্থান কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ আলোচনায় এসেছে। ডিএমপি ও বিএনপির পক্ষ থেকে ওই দুই স্থান পরিদর্শনের পর সমাবেশ কোথায় হবে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
বৈঠকে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয় থেকে পুলিশ সরে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান বরকতউল্লা। বৈঠক থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাঁদের বিষয়ে কথা হয়েছে। দুজনের আজ জামিন হয়েছে। আর উনারা বলেছে, আপনাদের উকিলেরা দাঁড়ালে রোববারের মধ্যে সব নেতাদের জামিন হয়ে যাবে। বলেছে, “আমরা কারো রিমান্ড চাইব না। কারও ব্যাপারে প্রসিকিউশন প্রতিবাদ করবে না।”’
এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘উনারা বিএনপি নেতা–কর্মীদের মুক্তি দাবি করেছেন। এটা আইনগত বিষয়, আইনের মধ্যে যেটা হয় সেটাই হবে।’
১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের কর্মসূচি। এ গণসমাবেশ কোথায় হবে, তা নিয়ে বিতর্ক-আলোচনার মধ্যেই বুধবার বিকেলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে মকবুল আহমেদ নামে বিএনপির এক কর্মী নিহত হন। গ্রেপ্তার করা হয় চার শতাশিক নেতাকর্মীকে।
বৈঠকে বুধবারের সংঘর্ষের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান বরকতউল্লা। তিনি বলেন, ‘প্রথম দাবি রেখেছি, আমাদের পার্টি অফিস খুলে দিতে হবে। উনারা বলেছেন, পার্টি অফিস খুলে দেবেন। ইতিমধ্যে বলেছেন, পার্টি অফিসে যেতে পারব।
কোনো অসুবিধা নেই। তারপর ১০ তারিখে সমাবেশ করার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছি।’
১০ তারিখের গণসমাবেশের স্থান নিয়ে বরকতউল্লা বলেন, ‘আমরা বলেছি, নয়াপল্টন। উনারা বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী, পল্টন না। পরবর্তীতে আমরা আরামবাগ বলেছি।
উনারা রাজি হয় নাই। আমরা সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট স্কুল বলেছি, এটাতেও রাজি হয় নাই। পরবর্তীতে বললাম, কমলাপুর স্টেডিয়াম। উনারা নীতিগতভাবে দেখছেন। আরেকটা প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটা হলো মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ। আমরা এখন যাব, দুটি মাঠ পরিদর্শন করে যেটি পছন্দ হয়, সেটি ওনাদের জানাবো। ১০ তারিখে গণসমাবেশ হবে।’
পরে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুটি ভেন্যু নিয়ে কথা হয়েছে। একটা হলো কমলাপুর স্টেডিয়াম। আরেকটি মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ। দুই পক্ষই একমত পোষণ করেছি। দুটি স্থানই আমরা দেখব, উনারাও দেখবেন। দুটির মধ্যে একটি হয়তো সিলেক্ট হবে। আমি মনে করি, ভেন্যু নিয়ে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল তা কেটে যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই তো রাস্তায় দিচ্ছি না। জনগণের দুর্ভোগ না হয়, রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেলে যান চলাচল করবে না, সে কারণেই মাঠ দিতে চেয়েছি। এবং উনারা (বিএনপি) রাজি হয়েছেন। উনারা দুটি মাঠও দেখবেন। অন্য কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে দুইটা জাগয়ার একটা একটা ভেন্যু হবে।’