বিরোধী দলই আসলে রাজনৈতিক দলের ‘ক্যারেক্টার’ তৈরি করে: সারোয়ার তুষার

‘পিপলস ইলেকশন পালস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার (বাঁ থেকে চতুর্থ)ছবি: প্রথম আলো

বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে এক বছরের মধ্যে ভোট হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। তিনি বলেছেন, এনসিপির জন্য বিরোধী দল হওয়াটাই ভালো। বিরোধী দলই আসলে রাজনৈতিক দলের ‘ক্যারেক্টার’ তৈরি করে।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিডিবিএল ভবনে এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় সারোয়ার তুষার এসব কথা বলেন। ‘পিপলস ইলেকশন পালস’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় একটি জরিপের ফলাফলও তুলে ধরা হয়। জরিপটি করেছে ইনোভিশন নামের একটি বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। আর এই কাজে সহযোগিতা করেছে ব্রেইন ও ভয়েস ফর রিফর্ম।

আলোচনা সভায় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, এবারের নির্বাচন খুবই ইন্টারেস্টিং হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘অবভিয়াসলি (স্পষ্টত), এখনো যা সিচুয়েশন (পরিস্থিতি), এক বছরের মধ্যে আমি মনে করি যে বিএনপি গভর্নমেন্ট ফর্ম করবে এবং আমাদের জন্য বিরোধী দল হওয়াটাই ভালো। বিরোধী দল আসলে ক্যারেক্টার তৈরি করে দলের। আমি দেখতে চাই, দলটা বিরোধী দলে যাক। বিএনপি সরকারে যাক, আমরা বিরোধী দলে যাই।’

সারোয়ার তুষার বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির কিছু সদস্য সংসদে থাকুক, আর বাইরে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবেও তাঁরা থাকবেন। এটা তাঁর ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা।

সামনে রোমাঞ্চকর সময় আসছে উল্লেখ করে সারোয়ার তুষার বলেন, সেটা যেন রাজনৈতিক হানাহানির পর্যায়ে না যাই। প্রতিযোগিতাটা যেন একটা ডিসেন্ট (ভদ্রতার) পর্যায়ে থাকে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি আগামী নির্বাচনে ৩০–৩৫ শতাংশ ভোট টানতে পারে বলে মনে করেন সারোয়ার তুষার। তাঁর দাবি, জামায়াতে ইসলামীর চেয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির ভোট অবশ্যই বেশি হবে।

জামায়াতে ইসলামীর জনপ্রিয়তা বাড়ছে, এটা ঠিক উল্লেখ করে সারোয়ার তুষার বলেন, দেশে যে ধরনের পরিস্থিতি আছে, ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে এ রকম পরিস্থিতিতে জামায়াতের জনপ্রিয়তা বেশি থাকে। কিন্তু যখনই ভোট আসবে, জামায়াতের যে ভোট আছে, তার চেয়ে কিছু বাড়বে। জাতীয় নাগরিক পার্টিতে বিএনপি ও জামায়াত—দুই দল থেকেই ভোট আসবে।

আওয়ামী লীগের ভোট এবার জাতীয় নাগরিক পার্টি, বিএনপি ও জামায়াত—তিন দিকেই যাবে বলে মনে করেন সারোয়ার তুষার। তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে যারা তরুণ আওয়ামী লীগার ছিল, ছাত্রলীগার টাইপের ছিল বা একটা ন্যারেটিভের ভিকটিম ছিল বা নিরুপায় হয়ে করেছে—এ রকম একটা বড় (অংশ) এই দিকে (জাতীয় নাগরিক পার্টি) আসার সম্ভাবনা আছে, যদি আমরা সেভাবে তাদেরকে…। কারণ, এটা বাংলাদেশের মানুষ এবং তাঁদেরকে তো আমরা ইয়া করতে পারব না। যাঁদের ক্রিমিনাল রেকর্ড নাই, তাদের সাথে ইয়া কি। তাদেরকে তো একটা জায়গা দিতে হবে এবং সকল দল করছে। বলে লাভ নাই, বিএনপি সারা দেশে আওয়ামী লীগকে শেলটার (আশ্রয়) দিচ্ছে, ক্রিমিনালদেরকে (সন্ত্রাসী) শেলটার দিচ্ছে। এটা আপনারা সবাই জানেন। সে ক্ষেত্রে যারা ভোটার, তাদেরকে তো আমাদের দিকে টানতে চাইব–ই, এটা খুবই ন্যাচারাল।’

এ সময় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট ফর গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, ভয়েস ফর রিফর্ম প্লাটফর্মের সহ-আহ্বায়ক ও বিডিজবসের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, ইনোভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়াত সারওয়ার, অর্থনীতিবিদ অনন্য রায়হান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ব্রেইনের নির্বাহী সফিকুর রহমান।

সংশোধনী: বিভ্রান্তি এড়াতে এই প্রতিবেদনের শিরোনাম ও সূচনা (ইনট্রো) পরিবর্তন করা হলো।