দেশবাসীকে সংযমের পরিচয় দেওয়ার আহ্বান ফখরুলের

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরফাইল ছবি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যে বড় বিজয় এসেছে, তার সাফল্য যাতে অন্যদিকে প্রবাহিত না হয়, সে জন্য দলের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে সংযমের পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘ক্রোধ, ঘৃণা বা প্রতিশোধের বশবর্তী হয়ে আমরা যেন কাউকে আক্রমণ না করি, কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না করি। বিশেষ করে, আমাদের যেসব বন্ধুরা-ভাইয়ের আমাদের সঙ্গে আছে, ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু—তাদের ওপর যেন কোনো আক্রমণ না হয়। তাদের রক্ষা করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’

সোমবার রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে দলের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি তিনি এই আহ্বান জানান।  

সারা দেশে যে সহিংসতা ও হামলার ঘটনা ঘটছে, তার উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে দলের সব নেতা-কর্মীদের প্রতি আবেদন জানাতে চাই, আপনারা সবাই নেমে পড়ায় যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে, সে প্রবণতা থেকে দেশকে রক্ষা করুন। কাউকে সে সুযোগ নিতে দেবেন না, যে সুযোগে দুষ্কৃতকারীরা অন্যের ওপর আঘাত আনবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন, আজকে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করব। একই সঙ্গে আমরা নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করে দেশকে রক্ষা করব। যে অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, এই ঐক্যকে দৃঢ় রেখে দেশকে আমরা দেশের শত্রুদের হাত থেকে, বাইরে শত্রুদের হাত থেকে অবশ্যই রক্ষা করব। এটাই হচ্ছে আজকে আমাদের বড় আবেদন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া দেশবাসীর প্রতি আবেদন জানিয়েছেন যে ধৈর্য ধরুন, শান্ত হোন এবং দেশকে রক্ষা করুন এবং যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সে উদ্যোগকে সফল করুন।’

দেশ ভয়াবহ দানবের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে। তারা আজকে উপযুক্ত সময়ে পদক্ষেপ নিয়েছে।’

সেনাবাহিনীর পদক্ষেপে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সব রাজনৈতিক দল ও আন্দোলনের মূল ছাত্রনেতাদের আলোচনার জন্য গণভবনে আনা হয়েছে।

আলোচনায় কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এর প্রথমটি হচ্ছে সংসদ ভেঙে দিয়ে অতি দ্রুত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে নির্দলীয় ব্যক্তিদের নিয়ে। এ ছাড়া দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সেই সব নেতা-কর্মী এবং ছাত্রনেতা, যাদের অন্যায়ভাবে গত ১ জুলাই থকে বন্দী করে রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তি দেওয়া হবে।  

সবশেষে মির্জা ফখরুল লন্ডনে নির্বাসিত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম উল্লেখ করে বলেন, তাঁকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। তারেক রহমান প্রতি মুহূর্তে এই আন্দোলনে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁকেও অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, ইনশা আল্লাহ এটাও আমরা সফল হব।’