সচিবালয়ে আগুন, টঙ্গী হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা: মামুনুল হক

যুব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সচিবালয়ে আগুন, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের আস্ফালন একই সূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘দেশের স্বার্থবিরোধী ফ্যাসিবাদী আওয়ামী গোষ্ঠী পালালেও তাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই।’

বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের ১৫ বছর পূর্তিতে গতকাল শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে এক যুব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মামুনুল হক এসব কথা বলেন।

মামুনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত— এক ভাগে ভিনদেশি দালাল, আরেক দিকে দেশপ্রেমিক জনতা। ভিনদেশি চক্র ১৫ বছর বাংলাদেশকে জিম্মি করে রেখেছিল।’ সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা বাংলাদেশের কাগজ পুড়িয়ে ফেলতে পার, কিন্তু মানুষের মনে তোমাদের বিষয়ে যে ঘৃণা জন্মেছে, তা মুছে ফেলতে পারবে না।’

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, এর আগে ইসকনকে দিয়ে বাংলাদেশ ধ্বংসের চেষ্টা প্রকাশ পেয়েছে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার মধ্য দিয়ে। টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে যাঁরা রাত গভীরে ঘুমিয়ে থাকা নিরীহ মুসল্লিদের ওপর হামলা করে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, এই হামলাকারীরা তাবলিগের সাথি নয়, তারা খুনি ও ভিনদেশি শক্তির অংশ। এই ফ্যাসিবাদের দোসরদের রুখে দিতে দেশপ্রেমিক যুবকদের কাজে লাগাতে হবে।

সমাবেশ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মামুনুল হক বলেন, ‘দেশবিরোধী শক্তিদের স্পেস দিলে আপনাদের স্পেস কমে যাবে। আপনাদের হাতে সময় সীমিত। এ সময় যথাযথভাবে কাজে লাগান।’

এ সময় খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কোনো বাকশাল দেখতে চাই না। আমরা ছাত্র-জনতার অধিকার আদায় করতে চাই। জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। আন্দোলন ও সংগ্রামের জন্য যখন কোনো ভূখণ্ড তৈরি হয়ে যায়, তখন তা দমিয়ে রাখা যায় না।’

মামুনুল হক আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছিল বিভাজনের রাজনীতি। কিন্তু চব্বিশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার ছাত্ররা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেই বিভাজন ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন সচেতন হয়েছে।’

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা ইসমাইল নূরপুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। সে সন্ত্রাসী ছিল। ২০১৩ সালে জিকিররত মুসল্লিদের ওপর অতর্কিত হামলা করে অসংখ্য আলেম ও ইসলামপ্রিয় জনতাকে শহীদ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশের সব কাঠামো ধ্বংস করে পালিয়েছে। যারা বলে হাসিনা আবার ফিরে আসবে, তাদের স্পষ্ট করে বলতে চাই, তা কখনো সম্ভব না। তা আমরা হতে দেব না।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব জালালুদ্দিন আহমাদ, আতাউল্লাহ আমিন, কুরবান আলী, আবদুল আজিজ, শরাফত হুসাইন, মাহবুবুল হক, তোফাজ্জল হুসাইন মিয়াজী, শাহিনুর পাশা চৌধুরী প্রমুখ।