এখন তো শেখ হাসিনার সিন্ডিকেট নেই, তাহলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে কেন: রিজভী

রাজধানীর পল্লবীতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ঢাকা, ০৯ অক্টোবরছবি: সংগৃহীত

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা সিন্ডিকেট করতেন আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে। এখন তো বাজারে সেই সিন্ডিকেট নেই। তাহলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে কেন?

আজ বুধবার রাজধানীর পল্লবীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনামূলক প্রচারপত্র বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, মোটা চাল, মাঝারি চাল কেন কেজিতে তিন-চার টাকা বেড়েছে? এখন কেন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা বেড়েছে, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১২ টাকা বেড়েছে? এটা জনগণ প্রত্যাশা করেনি। জনগণ সিন্ডিকেটমুক্ত বাজার চায়। তাই বাজার মনিটরিং তীব্রতর করা হোক।

অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারে ‘ঢিলেঢালা’ ভাব করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, ‘কোথায় যেন ঢিলেঢালা ভাব, এইভাবে চলবে না। আমি শুধু বলে রাখতে চাই, আমরা আন্দোলন থেকে চূড়ান্ত ইস্তফা দিইনি। অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে কারও যদি অশুভ উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে আমরা আন্দোলন–ঝড়ের আর্তনাদ আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) শোনাব। যদি সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে রহস্য থাকে, তাহলে আপনাদের প্রতিরোধের ঝড়ের বাক্য শোনাব। তাই অবিলম্বে সুষ্ঠু ধারায় গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের সরকার বলে মন্তব্য করেন রুহুল কবির। তিনি বলেন, এই সরকার যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে গণতন্ত্র ও জনগণ ব্যর্থ হবে। শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিবাদীর যেন প্রত্যাবর্তন না হয়, এটাই জনগণ চায়। বিএনপি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দল। বিগত ১৬–১৭ বছর নিরন্তর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গুম-খুনের শিকার হয়ে অসংখ্য নেতা-কর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেন, চোখ হারিয়ে অন্ধ করে দিয়েছে শেখ হাসিনার পুলিশ; সেই দল বিএনপি। কিন্তু কেন যেন মনে হয়, উপদেষ্টারা বিএনপিকে এক চোখে দেখার চেষ্টা করছেন।

জনগণ ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের নামে যদি নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে, তাহলে মানুষ সন্দেহ করবে। কী এমন ঘটনা আছে যে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করতে পারছে না? অথচ গণতন্ত্রের একটি উপাদান অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন, যা কেড়ে নিয়েছিল শেখ হাসিনা। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেয়নি। এখন জনগণ উন্মুখ হয়ে আছে। যাঁদের বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছর, তাঁরা ভোট দিতে পারেননি।

রুহুল কবির আরও বলেন, শেখ হাসিনা মাঝে মাঝে তাঁর বক্তব্য ইচ্ছা করে ভাইরাল করে দেন। তিনি ভারতে আছেন। নিজেই লোক দিয়ে বক্তব্য ভাইরাল করান। তাঁর দলের নেতা ও তাঁর পুলিশ প্রশাসনের কাউকে বিদেশে ঘুরতে, হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। আর যাঁরা দেশে আছেন, তাঁদের হাতে বিএনপির নেতারাই খুন হচ্ছেন। গোপালগঞ্জে দিদার হত্যা, নরসিংদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা, এগুলো অশুভ ইঙ্গিত। শেখ হাসিনার আরেকটা ভয়ংকর পরিকল্পনা। অন্তর্বর্তী সরকার যদি শেখ হাসিনার ময়লার বস্তা ঘাড়ে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় তাহলে কিন্তু কোনো সংস্কার করতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুল আলম, আমিনুল হক, তাবিথ আউয়াল, যুবদল নেতা এস এম জাহাঙ্গীর, মেহবুব মাসুম প্রমুখ।