যাঁরা ‘আমি রাজাকার’ বলেন, তাঁদের শেষ দেখে ছাড়বে ছাত্রলীগ
কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাঁরা ‘আমি রাজাকার’ স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁদের শেষ দেখিয়ে ছাড়বেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যারা লালন করে না, তাদের হাতে আন্দোলনের (কোটা সংস্কার) ‘রিমোট কন্ট্রোল’ চলে গেছে। ছাত্রলীগ রাজনৈতিকভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলন মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল শুরু হওয়ার আগে সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন সাদ্দাম হোসেন।
যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে না, তারা এখন সম্পূর্ণভাবে এই আন্দোলনকে কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করছে।ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন
আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করার প্রতিবাদে ছাত্রলীগ গতকাল বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ছিল ছাত্রলীগের।
এর আগে সংগঠনের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা এবং একাত্তরের গণহত্যাকারীদের পক্ষে যারা সাফাই গেয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা নৈরাজ্য তৈরি করতে চায়, রাজাকারদের তোষণ করার রাজনীতি বাংলাদেশে যারা বাস্তবায়ন করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।
বিজয় একাত্তর হলে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে, ভাঙচুর করেছে। ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। প্রথমে বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করে। পরে সব হল থেকে ছাত্ররা বেরিয়ে এসে অপকর্মের প্রতিরোধ করে।ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ
ছাত্রলীগ অনেক দায়িত্বশীলতা ও বিনয়ের পরিচয় দিয়েছে উল্লেখ করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, যৌক্তিক ও পরিকল্পিত উপায়ে বিষয়টি (কোটা সংস্কার) সমাধানের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রলীগ। কিন্তু যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে না, তারা এখন সম্পূর্ণভাবে এই আন্দোলনকে কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যারা লালন করে না, তাদের হাতে আন্দোলনের রিমোট কন্ট্রোল চলে গেছে।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজনৈতিকভাবে এটি (কোটা সংস্কার আন্দোলন) মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যারা আজও এই বাংলাদেশে থেকে ‘আমি রাজাকার’ বলার হিম্মত দেখায়, তাদের শেষ দেখিয়ে ছাড়বে ছাত্রলীগ।
‘শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করেছে’
কোটা সংস্কার আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ। তিনি দাবি করেন, ‘বিজয় একাত্তর হলে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে, ভাঙচুর করেছে। ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। প্রথমে বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করে। পরে সব হল থেকে ছাত্ররা বেরিয়ে এসে অপকর্মের প্রতিরোধ করে।’
দলীয় কর্মীদের বাঁচাতে নয়, বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশ হিসেবে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা রাস্তায় নেমেছেন বলে জানান শেখ ওয়ালি। তিনি দাবি করেন, সন্ত্রাসীরা কমপক্ষে ১০০ জন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা ছদ্মবেশে মেয়েদের ওপর হামলা করে অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ছাত্রলীগ স্পষ্ট ভাষায় এ ধরনের অপচেষ্টার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
কোটা সংস্কারের পক্ষে ছাত্রলীগের অবস্থানের কথা জানিয়ে শেখ ওয়ালি বলেন, ‘আমরা সব সময় বলেছি, কোটার যৌক্তিক সংস্কার চাই। আশা করছি, যৌক্তিক সমাধান হবে।’