উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তিন বিষয়ে ভাবতে হচ্ছে ইসিকে

  • মোট উপজেলা পরিষদ ৪৯৫টি।

  • এখন নির্বাচন উপযোগী ৪৫২টি।

  • ১২ মার্চের মধ্যে করতে হবে কুমিল্লার মেয়র নির্বাচন।

নির্বাচন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করার ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পরীক্ষা, পবিত্র রমজান মাস ও বর্ষাকাল—এই তিনটি বিষয় নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।

ইসি সূত্র জানায়, আগামী মার্চ থেকে কয়েক ধাপে উপজেলা নির্বাচন করতে চায় ইসি। এর বাইরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদেও নির্বাচন করতে হবে। রোজার আগে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই নির্বাচন করা হতে পারে। চলতি সপ্তাহে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

মাধ্যমিক পরীক্ষা, রমজান ও বর্ষার কারণে ভোটের দিনক্ষণ নির্ধারণে ভাবতে হচ্ছে ইসিকে।

চলতি বছর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনসহ আরও কিছু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন করতে হবে। সারা দেশে উপজেলা পরিষদ আছে ৪৯৫টি। সাধারণত সব উপজেলায় একসঙ্গে নির্বাচন করা হয় না। একাধিক ধাপে এই নির্বাচন করা হয়। এবারও ধাপে ধাপে এই নির্বাচন করার চিন্তা করছে ইসি।

এর আগে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। ওই বছরের মার্চ থেকে শুরু হয়ে পাঁচ ধাপে ৪৫৫টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন শেষ হয়েছিল জুনে। এর মধ্যে মার্চেই চারটি ধাপের ভোট হয়েছিল। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট হয় দলীয় প্রতীকে। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও এবার দলীয়ভাবে প্রার্থী না দেওয়ার কথা ভাবছে। এটি হলে এবারের নির্বাচন হবে মূলত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে।

ইসি সূত্র জানায়, আইন অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের মেয়াদ পূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। এখন ৪৫২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপযোগী হয়ে আছে। জুনের মধ্যে এসব উপজেলায় নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া আগামী মার্চের মধ্যে অল্প কিছু বাদে প্রায় সব কটি উপজেলা নির্বাচন উপযোগী হবে।

এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে এই নির্বাচন করা ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা আছে ইসিতে। এসএসসি পরীক্ষার সময় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় সরকারের কিছু উপনির্বাচন করা হতে পারে।

কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষ হবে ১২ মার্চ। ১১ মার্চ থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে। সাধারণত এসএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষা এবং রমজান মাসে নির্বাচন করা হয় না। অন্যদিকে মে-জুন থেকে শুরু হবে বর্ষাকাল। সব মিলিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য সুবিধাজনক সময় হবে এপ্রিলের শেষ থেকে মে মাস পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে ভোট করার চিন্তা করছে ইসি। উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপও রোজার আগে করার বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি সচিবালয়। তবে এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে এই নির্বাচন করা ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা আছে ইসিতে। এসএসসি পরীক্ষার সময় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় সরকারের কিছু উপনির্বাচন করা হতে পারে।

২০২২ সালের জুনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আরফানুল হক। গত ১৩ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যুতে মেয়র পদটি শূন্য হয়। আইন অনুযায়ী, শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এই পদে নির্বাচন করতে হবে।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা পরিষদ এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়া গেছে। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ইসি। তিনি বলেন, রোজার আগে উপজেলার প্রথম ধাপের নির্বাচন করা হতে পারে। কারণ, এরপর বর্ষা চলে এলে কিছু এলাকায় ভোট করতে সমস্যা হতে পারে। এ বিষয়ে এ সপ্তাহের মধ্যে ইসি সিদ্ধান্ত নিতে পারে।