ভারত রাজনৈতিক বন্ধু, চীন উন্নয়নের বন্ধু: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরফাইল ছবি

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারত্ব উন্নয়নের বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘ভারত আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু, চীন আমাদের উন্নয়নের বন্ধু।’

আজ শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে ‘শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রে’ পাহাড়ি ফল মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। পার্বত্য চট্টগ্রাম–বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সাত দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই নীতি শেখ হাসিনারও নীতি। এই নীতি সরকার অনুসরণ করে। তিনি আরও বলেন, ‘ভারত আমাদের ’৭১ সালের পরীক্ষিত বন্ধু। ’৭১ সালের রক্তের রাখিবন্ধনে আমাদের এই সম্পর্ক  আবদ্ধ।’ এ সময় মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের সহযোগিতা, ছিটমহল বিনিময়, আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা বিজয়সহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘দুঃসময়ের বন্ধুদের আমরা ভুলে যেতে পারি না।’

ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যু সমাধানের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সম্পর্ক ভালো থাকলে আলাপ–আলোচনা করে সমাধান করা যায়। আর এসব সমাধান কেন হয়েছে, ২৫ বছরের মৈত্রী চুক্তির জন্য। এই চুক্তিকে তারা (বিএনপি)  বলছে, গোলামির চুক্তি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ কী পেল? তিনি বলেন, ‘খালি হাতে ফিরেছি? খালি হাতে আগে ফিরিনি, এবারও ফিরিনি।’

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর সম্পর্কে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের অংশীদারত্ব আছে উন্নয়নের। ভারত আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু। চীন আমাদের উন্নয়নের বন্ধু। আমাদের চট্টগ্রামের দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র টানেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্ণফুলী টানেল। এটা কে করে দিয়েছে? চীনারা। ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোর লেনের যে রাস্তা দিয়ে আসেন, এ উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণ করেছে সিনো হাইড্রো। গতকাল (শুক্রবার) পদ্মা সেতুর যে সমাপনী অনুষ্ঠান হলো, এই পদ্মা সেতুর মেইন ব্রিজ ও রিভার চেঞ্জিং দুটো কোম্পানিই চীনের। তারা আমাদের পদ্মা সেতু করে দিয়েছে।’

মেট্রোরেলের জন্য জাপান সাহায্য করেছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমার উন্নয়নের জন্য যেখানে সুযোগ-সুবিধা পাব, তা কেন আমি নেব না? আমার তো সাহায্য দরকার। যেখানে সাহায্য দরকার, সেখানে আমি সাহায্য কেন নেব না? এতে কারও কারও গা জ্বলে, কেউ কেউ অন্তর–জ্বালায় জ্বলছে। কেন পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল হয়ে গেল। এটা অনেকের অন্তর–জ্বালা। অন্তর–জ্বালায় যারা মরে, তাদের এই সব প্রশ্নের জবাব দিতে চাই না।’

চীন সফরে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী—বিএনপির এমন বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আমরা যাই না। বিএনপির সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিলেন, নিজেদের এত টাকার দরকার কী? এত টাকা নিজেরা খরচ করলে বিদেশি টাকা পাওয়া যাবে না। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে প্যারিস কনসোর্টিয়ামে বারবার হাজির হতেন বিএনপির অর্থমন্ত্রী। তাদের মুখে বড় বড় কথা শোভা পায় না।’

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নতজানু কারা হয়? মেরুদণ্ডহীনেরা নতজানু হয়। বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা কোনো দিনও নতজানু হবেন না।’