অবশ্যই ইভিএমে নির্বাচন করব: রওশন এরশাদ
ব্যাংককে চিকিৎসাধীন সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, সারা বিশ্বে ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) নির্বাচন চলছে। তিনিও ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন করবেন।
রওশন এরশাদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি কখনো নির্বাচন বর্জন করে নাই। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে বিশ্বাস করে এবং অংশ নেয়। আমরা অবশ্যই নির্বাচন করব। ইভিএমে হলেও নির্বাচন করব।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে রওশন এরশাদের ধারণ করা ভিডিও বার্তাটি প্রচার করা হয়।
গত মাসে ব্যাংককে ধারণ করা এই ভিডিও বার্তায় রওশন এরশাদ বলেন, ‘আমাদের দেশে ইভিএমে (নির্বাচন) হবে, এটা তো নতুন কথা নয়, যখন আমরা ফাইভ–জি ব্যবহার করছি। তাহলে এতে মানা কোথায়। যারা নির্বাচনে জিতে তারা বলে নির্বাচন ফেয়ার হয়েছে, যারা হেরে যায় তখন বলে ফেয়ার হয়নি। অবশ্যই ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন করব।’
রওশন এরশাদ ব্যাংকক থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ২৬ নভেম্বর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ১০ম সম্মেলন আহ্বান করেন। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই দলে বিতর্ক ও বিভক্তি দেখা দিয়েছে। সম্মেলন উপলক্ষে রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ আজ সংবাদ সম্মেলন করেন।
ধারণ করা ভিডিওতে রওশন এরশাদ আরও বলেন, তিনি এখন অনেকটা সুস্থ। আগামী মাসে (চলতি অক্টোবর) দেশে ফিরবেন।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর দল অনেকটা দুর্বল এবং এলোমেলো হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করে রওশন এরশাদ বলেন, ‘দলকে শক্তভাবে দাঁড় করাতে হবে, বহিষ্কৃত এবং নিষ্ক্রিয়দের দলে ফেরাতে হবে, যাতে আগামী নির্বাচনটা ভালোভাবে করতে পারি।’
রওশন এরশাদ বলেন, ‘আমি জানি, নির্বাচন দেওয়া হবে, ভালো নির্বাচন হবে এবং দেশটা এগিয়ে যাওয়ার জন্য তারা কাজ করবে—যারা জিতে আসবে। দেশবাসী নিশ্চয়ই ভালো থাকবে নির্বাচনে। ইনশা আল্লাহ ভালো ফলাফলই হবে।’
যদিও জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচনের ঘোর বিরোধিতা করে আসছে।
রওশন এরশাদের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দোয়া করি, তিনি সুস্থ হয়ে উঠুন, ভালো থাকুন। কিন্তু তিনি ইভিএম নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা জাতীয় পার্টির নয়। আমরা প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েই ইভিএমের বিরোধিতা করছি। কারণ, ইভিএমের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। মানুষের মধ্যে ইভিএম নিয়ে আতঙ্ক ঢুকে গেছে। কারণ, এটার নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে। সে কারণে আমরা ইভিএমের বিরোধিতা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে গোলাম মসীহ ছাড়াও দেলোয়ার হোসেন খান, এস এম এম আলম, জিয়াউল হক মৃধা, এম এ গোফরান, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, নুরুল ইসলাম, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, ইকবাল হোসেন ও কাজী মামুনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টির সূত্র জানায়, সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের মধ্যে কেউই দীর্ঘদিন থেকে দলে নেই। এর মধ্যে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্যসচিব গোলাম মসীর জাতীয় পার্টিতে প্রাথমিক সদস্যপদও নেই। বাকিরা প্রত্যেকেই দল থেকে বহিষ্কার বা অব্যাহতি পেয়েছেন। আবার কেউ কেউ দলীয় পদ থেকে বাদ পড়েছেন।