আওয়ামী লীগও ৩০ জানুয়ারি কর্মসূচি দিল
আওয়ামী লীগ ৩০ জানুয়ারি সারা দেশে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। ওই দিন দলটি দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলায় শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এক সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ঘোষণা দেন। এর আগে আজ বিএনপি ৩০ জানুয়ারি দেশের সব মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা ও পৌরসভায় কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘বিএনপি-জামায়াতের অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের শান্তি ও গণতন্ত্রের’ আজকের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘৩০ জানুয়ারি শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন সমাবেশ হবে সব মহানগর, জেলা ও উপজেলায়। সেদিন আপনারা লাল–সবুজ পতাকা হাতে গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়ন কীভাবে হবে, সেই কথা বলবেন। সারা দেশে আমাদের নেতা-কর্মীরা পাহারায় থাকবেন।’
এর আগে আজ রাজধানীর নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। সেখান থেকে ৩০ জানুয়ারি দেশের সব মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা ও পৌরসভায় কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় তারা। ‘অবৈধ ডামি সংসদ বাতিল ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের’ দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
বিএনপির আজকের কালো পতাকা মিছিলকে ‘শোক মিছিল’ বলে আখ্যা দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘কালো পতাকা মিছিল আরেক ভুয়া। ৩০ তারিখে আবার ডাকছে, সেটাও ভুয়া। লোকজন নেই, জনগণ নেই, নেতা-কর্মীরা হতাশ। কারণ, লন্ডনে থাকা তারেক জিয়ার প্রতি কোনো আস্থা নেই। যাদের সঙ্গে জনগণ নেই, তারা ভুয়া। নির্বাচনের খেলা শেষ। এখন খেলা হবে রাজনীতির।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গয়েশ্বর বাবু আজ পল্টনে হাজির হয়েছেন। এত দিন কোথায় ছিলেন গয়েশ্বর বাবু? বলেছিলেন, অলিগলি খুঁজে পাব না...। কে পালিয়েছে?’
৭ জানুয়ারি দেশে অত্যন্ত ভালো একটি নির্বাচন হয়েছে দাবি করে সমাবেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি নির্বাচনের আগে বিদেশিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছিল। বিদেশিরা তাদের কথায় সাড়া দেয়নি। তিনি বলেন, এই সরকারের সঙ্গে যাতে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো কাজ না করে, সে জন্যও তারা কায়দা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পৃথিবীর সমস্ত সরকার শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে।
বিএনপি আবার নতুন ষড়যন্ত্র করতে চায় বলেও অভিযোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে আবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে বিএনপি এখন গর্ত থেকে মিটিমিটি তাকাচ্ছে, আর বের হওয়ার চেষ্টা করছে। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে কাউকে অশান্তি সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। তাদের কালো হাত ভেঙে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি ভেবেছিল বিদেশিরা তাদের ক্ষমতায় বসাবে। তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা (বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো) ভেবেছিলেন, নিষেধাজ্ঞা আসবে। আপনারা ভেবেছিলেন, এবার অন্তত গানবুট আসবে। গানবুটও আসে নাই, কোনো নিষেধাজ্ঞাও আসে নাই। তারা এখন প্রতিদিন ফুল নিয়ে আমাদের নেত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। অবরোধের বদলে, সপ্তম নৌবহরের বদলে ফুল নিয়ে আসছে। এটিই আমাদের সাফল্য।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, নির্বাচন কোনো একটি দল বর্জন করলে তাতে কিছুই যায় আসে না। যতক্ষণ নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ থাকে, ততক্ষণ সেই নির্বাচনকে বানচাল করার কোনো সুযোগ নেই। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবার প্রমাণ হয়েছে, বাংলাদেশে নির্বাচন বর্জন করার রাজনীতি আর চলবে না। এটা এখন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।