হাওয়া ভবনের বড় চোর ও সন্ত্রাসীদের হাতে দেশ তুলে দেওয়া যাবে না: তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রামে কৃষক লীগের সম্মেলনে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, তারেক রহমান মানে হচ্ছে, দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন, দুর্নীতির বরপুত্র। হাওয়া ভবনের সবচেয়ে বড় চোর ও সন্ত্রাসীদের হাতে দেশ তুলে দেওয়া যাবে না।

আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, তাঁরা যদি আওয়ামী লীগকে বিদায় দিতে পারেন, তাহলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠন করবেন। আর বিএনপির নেতা আসাদুল হক দুলু নাকি বলেছেন, যদি তাঁরা ক্ষমতায় যান, তাহলে সব মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলবেন। যাঁরা মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলতে চান, তাঁদের হাতে দেশ তুলে দিতে পারি না, তাই সবাই ঐক্যবদ্ধ হন।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শীতকালে যেমন সাইবেরিয়া থেকে শীতের পাখিরা এসে আমাদের এখান থেকে ধান খেয়ে মোটাতাজা হয়ে আবার চলে যায়, বিএনপিও হচ্ছে শীতের পাখির মতো। পাঁচ বছর খবর নেই, নির্বাচন যখন আসে, তখন শীতের পাখির মতো আসবে। এই শীতের পাখিদের আর সুযোগ দেওয়া যাবে না।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। এরা জনগণের শত্রু, দেশের শত্রু, এদের সব পর্যায়ে প্রতিহত করতে হবে। যারা হাওয়া ভবন বানিয়ে মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তুলত, যারা বিদ্যুৎ না দিয়ে খাম্বা লাগাত, যারা একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলা করেছে, যারা এস এম কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমামকে হত্যা করেছে, যারা সারা দেশে বাংলা ভাই সৃষ্টি করে গাছের সঙ্গে টাঙিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, ৫০০ জায়গায় বোমা ফাটিয়েছে, তাদের হাতে দেশ তুলে দিতে পারি না।’

দেশের পরিবর্তনের কারণে মানুষ আজ শেখ হাসিনার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তাই এই পরিবর্তন বিএনপির সহ্য হয় না বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী। বিএনপি এখন সারা দেশে সমাবেশ করে সন্ত্রাসীদের জড়ো করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গতকাল কাঁচপুর ব্রিজের নামফলক জ্বালিয়ে দিয়েছে; অর্থাৎ তারা (বিএনপি) আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল-রিজভী-গয়েশ্বর বাবুরা যা–ই বলুন না কেন, কয়েক দিন আগে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলে গেছেন, বাংলাদেশ যে অগ্রগতি করেছে, এটা পৃথিবীর জন্য উদাহরণ, বিস্ময়কর অগ্রগতি।’

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধন করেন কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ। সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের নেতা আকবর আলী চৌধুরী, রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল পলোগ্রাউন্ড মাঠ আগাম পরিদর্শনে তথ্যমন্ত্রী

এর আগে আজ সকালে দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শনে যান হাছান মাহমুদ। আগামী ৪ ডিসেম্বর এ মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামে ইনশা আল্লাহ লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। আপনারা জানেন, কিছুদিন আগে এখানে বিএনপি একটি সমাবেশ করেছিল। মাঠের তিন ভাগের এক ভাগ বাদ দিয়ে একটি মঞ্চ করেছিল। বাকি দুই ভাগের মধ্যেও অর্ধেক খালি ছিল। তারা যেভাবে বলেছিল, আসলে সেই রকম মানুষ হয়নি।’

হাছান মাহমুদ বলেন, পলোগ্রাউন্ডের কোনায় যে একটা কমিউনিটি হল আছে, ওখানে আগে ভ্যারাইটি শো হতো। সেই ভ্যারাইটি শোতে যে সংখ্যক মানুষ হতো, তার চেয়ে একটু বেশি মানুষ হয়েছে বিএনপির সমাবেশে। চট্টগ্রামে জব্বারের বলী খেলায়ও বিএনপির সমাবেশের চেয়ে তিন গুণ বেশি মানুষ হয়।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।