লন্ডনে সাংবাদিকদের জাহিদ হোসেন
লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে
লন্ডনের বিশেষায়িত হাসপাতাল ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিকে’ অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু হয়েছে। অধ্যাপক প্যাট্রিক একজন বিখ্যাত লিভার বিশেষজ্ঞ। উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে থাকা তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
ডা. জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাঁকে প্রফেসর জন প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে ভর্তি করা হয়েছে।’
লন্ডনের চিকিৎসকদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসকেরা এসেছেন, তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে বসে উনি দীর্ঘ সাড়ে চার বছর যাবৎ যেসব রোগে আক্রান্ত ছিলেন, তার প্রতিটি বিষয় ওনারা জানার চেষ্টা করেছেন। সেই অনুযায়ী কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়াকে প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে ভর্তি রেখে যেসব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, তাঁদের খুঁজে বের করা হবে। এরপর বাংলাদেশ থেকে যে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে ওনারা আলোচনা করবেন। পরবর্তী সময়ে বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসা ওনাদের পরামর্শমতোই চলবে। চিকিৎসা এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করেন খালেদা জিয়া। স্থানীয় সময় বুধবার সকালে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
দেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা হয়েছে, লন্ডন ক্লিনিকে এখন সেটার একটি পর্যালোচনা (রিভিউ) করা হবে বলে জানান অধ্যাপক জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘উনি কারাবন্দী ছিলেন, যেখানে ওনার সুচিকিৎসা করা হয় নাই, যে চিকিৎসা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় নাই। কাজেই ওনার একটা পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। তবে বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা যে চিকিৎসা করেছেন, অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি সেটার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। কিন্তু তারপরও অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা আমাদের দেশে সম্ভব হয়নি। সে জন্যই কিন্তু ওনাকে বাংলাদেশ থেকে এখানে আনা।’
আপাতত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্পর্কে আর বেশি কিছু বলার নেই জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ওনার অবস্থা স্থিতিশীল আছে। ওনাকে ভর্তি করা হয়েছে। উনি লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকবেন, যত দিন এখানকার চিকিৎসকেরা মনে করবেন ভর্তি থাকা প্রয়োজন।’
লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা ছুটি দিলে বিএনপি চেয়ারপারসন কিছুদিন বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থাকবেন। সেখান থেকে আরও কিছুদিন ফলোআপে থাকবেন। পরবর্তী সময়ে অন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক জাহিদ হোসেন।