কনক্রিট সাজেশন বলেন, না হলে ভুল–বোঝাবুঝি হবে: মান্না
৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়কে অভূতপূর্ব সুযোগ বলে উল্লেখ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, অভূতপূর্ব সুযোগ নিজেদের ভুলে যদি নষ্ট করে ফেলি, তাহলে ফিরে পেতে অনেক সময় লাগতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশু কল্যাণ ভবনে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না। দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘কতগুলো নীতিতে আমাদের একমত হতে হবে। যেমন আমরা গণতন্ত্র উত্তরণে এই এই নীতি অনুসরণ করবে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। যেহেতু ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটা পথনির্দেশিকা দিয়েছেন। কেউ বলতে পারেন ছয় মাস বেশি নেওয়া হয়েছে, আরও কমানো যেতে পারে। কনক্রিট সাজেশন বলেন। অথবা এমনভাবে বলেন, যাতে একটা কন্ট্রাকটিভ জায়গায় যেতে পারে। না হলে কিন্তু ভুল–বোঝাবুঝি হবে। যত বেশি বিভেদ হবে, ততই আমাদের আস্থা নষ্ট হবে।’
গুম কমিশনের রিপোর্টে ভয়াবহতা প্রকাশ পেয়েছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমাদের এমন ভয় আছে, হয়তো একসময় মানুষ মনে করবে বিচারগুলো না হলে কিসের ভোট। খোদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এসব গুম–খুনের হুকুমদাতা, এসবও বলা হয়েছে। তাঁর বিচার না করে তো যাওয়া যাবে না।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে, এখন পর্যন্ত পুলিশ ঠিক হয়নি, জনপ্রশাসনও ঠিক হয়নি। উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, তাবলিগ জামাতের চারজনকে হত্যা করা হলো। অভ্যুত্থানে যাঁরা অগ্রভাবে ছিলেন, তাঁদের গাড়িচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের মুখপাত্র ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচন নিয়ে রূপরেখার বিষয়টিকে ইতিবাচক উল্লেখ করে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, বিদ্যমান যে পরিস্থিতি, তাদের চার মাস পার হতে চলল। ইসি গঠন করা হয়েছে। এখন গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। এটা মার্চ মাসে না নিয়ে এখন থেকে শুরু করলে হয়তো সর্বোচ্চ ছয় মাসে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা সম্ভব।
সাইফুল হক বলেন, সরকারের দক্ষতা যোগ্যতা যদি থাকে, সরকারের কাজে যদি গতি আনা যায়, তাহলে মনে করি, নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সংস্কার করে আগামী বছরের মধ্যেই এই নির্বাচন করা সম্ভব, যেটা ইঙ্গিত (ড. ইউনূস) দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আর যাতে কাদা–ছোড়াছুড়ি না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে নীতিমালা করতে সরকার ও প্রধান বিচারপতির কাছে আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, শুধু নির্বাচন করার জন্য আবু সাঈদ ও মুগ্ধরা জীবন দেয়নি। পরিবর্তনের কাজও করতে হবে, তা না করতে পারলে ভবিষ্যতে হতাশা বাড়বে।
আইনশৃঙ্খলা ও দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি এখনো ঠিক হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান। পুলিশের সংস্কার করতে ট্রুথ কমিশন গঠন এবং ভারতের গুজব সন্ত্রাস রোধ করতে সরকারকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।