রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের প্রতিবাদে জামায়াতের বিবৃতি
জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। জামায়াত বলেছে, তাদের রাজনীতি ভারতের আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। জামায়াতের এই ভূমিকা গোটা জাতি গ্রহণ করেছে। আর এ কারণেই সম্ভবত রিজভীর গাত্রদাহ সৃষ্টি হয়েছে। কারা দলীয় টিম নিয়ে ভারত সফর করে, ভারতের সঙ্গে সখ্য করার চেষ্টা করেছে, তা জনগণ খুব ভালো করেই জানে।
আজ রোববার রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের পর গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে এর প্রতিবাদ জানান জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। এর আগে জাতীয়তাবাদী রিকশা ভ্যান অটোশ্রমিক দলের পক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রিজভী জামায়াতের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেন।
রিজভীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দেওয়া বিবৃতিতে জামায়াত বলেছে, রুহুল কবির রিজভী জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘৫ আগস্টের পর একটি রাজনৈতিক দলের আত্মসাৎ দেখেছে জনগণ; কারা পায়ের রগ কাটে তাদের চেনে জনগণ; ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে একাত্তরের বিরোধিতাকারী জামায়াত।’ রিজভীর এ ধরনের বক্তব্য কয়েক দশক ধরে প্রচার করা হচ্ছে। রগ কাটা, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার, একাত্তরের বিরোধিতা—এসব বক্তব্য জনগণ বহু আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে। রিজভী জামায়াতের বিরুদ্ধে এসব কথা উচ্চারণ করে কী অর্জন করতে চান, তা জনগণের কাছে স্পষ্ট নয়।
জামায়াত রগ কাটা ও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের রাজনীতি কখনো করেনি দাবি করে জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, রুহুল কবির রিজভী জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে ‘ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করেন; ইসলাম মানে তো বারবার মোনাফেকি করা না’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা চরম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। ইসলাম নিয়ে জামায়াত রাজনীতি করে না, রাজনীতি করে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে। জামায়াতে ইসলামী কখনো মোনাফেকি করেনি। জামায়াত দেশের মানুষের অধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আপসহীনভাবে লড়াই করেছে।
২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জোটকে এড়িয়ে ভিন্নমতের লোকদের সঙ্গে জোট করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে ঐক্য করা হয়েছিল, তা জাতির সঙ্গে মোনাফেকি কি না, বিএনপি নেতা রিজভীর প্রতি এই প্রশ্ন রেখে জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, জনগণ এই রাজনৈতিক ছন্দপতনের ইতিহাস ভুলে যায়নি। জামায়াত কখনো মোনাফেকির আশ্রয় নেয়নি।
জামায়াতের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘রিজভী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে “শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করতে চায় জামায়াত” বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে জনগণ বিস্মিত। এই বক্তব্য বিভ্রান্তিকর, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে জামায়াতের প্রতি অভিযোগ তোলার আগে রিজভীর আত্মপর্যালোচনা করা উচিত। কারা দলীয় টিম নিয়ে ভারত সফর করে, ভারতের সঙ্গে সখ্য করার চেষ্টা করেছে, তা জনগণ খুব ভালো করেই জানে। জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি ভারতের আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। জামায়াতের এই ভূমিকা গোটা জাতি গ্রহণ করেছে। আর এ কারণেই সম্ভবত রিজভীর গাত্রদাহ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এ ধরনের বিভ্রান্তিকর ও অপবাদ আরোপের রাজনীতি থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’