সরকারই এই ‘লজ্জা’ বহন করে এনেছে: খন্দকার মোশাররফ
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে যারা বাধা দেবে, আমেরিকা তাদের ভিসা দেবে না—এটা বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। এই আওয়ামী লীগ সরকারই বাংলাদেশের জন্য এই লজ্জা বহন করে এনেছে। তাই এই সরকারকে হটাতে হবে।
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কথাগুলো বলেন।
‘মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এই সমাবেশ করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই শেখ হাসিনার অধীনে অতীতেও কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তাই আমরা পুনরায় ঘোষণা করতে চাই, শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপিসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যারা আন্দোলনে আছে, কোনো দল শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না, এটা পরিষ্কার।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, এ দেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেখেছে, তাদের অধীনে বিগত দুইটি নির্বাচন কোনো নির্বাচন হিসেবেই গণ্য হয়নি। তাদের দ্বারা আর কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করা সম্ভব নয়। সে জন্য আজকে আমেরিকা থেকে শুরু করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো বলছে, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে।
নেতা-কর্মীদের গণ-আন্দোলনের জন্য ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান এই নেতা। তিনি বলেন, এই সরকারকে হটাতে গণ-অভ্যুত্থানের কোনো বিকল্প নেই।
প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে কিছু ‘বেপরোয়া’ ও ‘অতি উৎসাহী’ কর্মকর্তা আছেন, এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই অবৈধ সরকার জনগণের সরকার নয়।...অতীতে যারা এই অবৈধ সরকারের বেআইনি হুকুম মেনেছে, তাদের আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা আর কোনো নিষেধাজ্ঞা চাই না। আপনারা এ দেশের জনগণের সেবক, আপনারা জনগণের পক্ষে দাঁড়ান।’
সিঙ্গাপুর, ব্যাংককে ভিসার লাইন
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকারের বুলেট, লাঠি, অত্যাচার বিএনপির নেতা-কর্মীদের আর দমন করতে পারবে না। এই সরকার পানির বানের মতো ভেসে যাবে। তাঁর পরিচিত একজন উচ্চপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তার সাম্প্রতিক একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেকে ভিসা পাচ্ছে না। এখন লাইন লাগিয়েছে সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক আর প্রতিবেশী দেশে। আপনাদের কোথাও ভিসা দেওয়া হবে না। কারণ বিশ্বের কোনো সভ্য দেশ চোর-বাটপারদের জায়গা দেয় না।’
বিভিন্ন গোপন চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের বহু সম্পদ, বহু এলাকা সরকার বিদেশের হাতে তুলে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা আব্বাস।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘যতই বলেন নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। আপনাকে কেউ বিশ্বাস করে না, বিশ্বাস করার কোনো কারণও নেই। আপনাকে পদত্যাগ করতেই হবে, তারপর ভোট হবে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম। সমাবেশে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।