খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের উন্নতির লক্ষণ দেখছেন না চিকিৎসকেরা
৫০ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাঁর লিভার, কিডনিসহ মূল প্রত্যঙ্গগুলোর জটিলতা বেড়েই চলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
গত ৯ আগস্ট ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। ওই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরতে এই মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে কয়েক দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি নেত্রীর লিভার, কিডনি, হৃদযন্ত্র, ফুসফুস—এসব প্রত্যঙ্গে নতুন নতুন সমস্যা বা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। যখন যে উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তা প্রশমিত করা বা ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
জাহিদ হোসেন উল্লেখ করেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের জটিলতা বা সমস্যাগুলো এমন পর্যায়ে গেছে যে এখন দেশে চিকিৎসা দিয়ে সেসব সমস্যার উন্নতি আশা করা যায় না। সে জন্য নতুন নতুন উপসর্গ বা সমস্যা যা দেখা দিচ্ছে, সেগুলো প্রশমিত করা হচ্ছে বা কোনোভাবে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা রয়েছে, যাতে রোগীর কষ্ট কমানো যায়।
এই চিকিৎসক বলেন, এখন যত দ্রুত সম্ভব, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। মেডিকেল বোর্ড আবারও এই পরামর্শ দিয়েছে। কারণ, দেশে সেটা সম্ভব নয়। ফলে এখন সমস্যাগুলো কোনোভাবে প্রশমিত করে রাখা ছাড়া চিকিৎসকদের করার কিছু নেই।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর লিভার সিরোসিসের কারণে হৃদযন্ত্র, কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতা বেড়েছে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তাঁর পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে আনা হয়েছে। গত সপ্তাহে বিএনপি নেত্রীর ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাতে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি বলে খালেদা জিয়ার পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি প্রায় দুই বছর কারাবন্দী ছিলেন। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আরও সাত বছরের সাজা রয়েছে।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা মহামারির শুরুতে তাঁর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার তাঁর সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছিল। সেই থেকে তাঁর মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হচ্ছে।