রাজশাহীতে ইভিএমে ধীরগতি: কোথাও নষ্ট, ভোটাররা বিরক্ত

ভোট দিতে না পারায় তর্ক করেন ভোটার আবুল কালাম আজাদ
ছবি: শফিকুল ইসলাম

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ধরমপুর সমশের আলী মোল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকালে ভোট দিতে এসেছিলেন এই এলাকার ভোটার আবুল কালাম আজাদ। চারবার চেষ্টা করেও তাঁর ভোট নিতে পারেননি প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। মনের দুঃখে ইভিএমের প্রতি দোষারোপ করতে করতে বেরিয়ে যান আবুল কালাম।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। আজ বুধবার সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়, চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। তবে অনেক কেন্দ্রেই ইভিএম ধীরগতিতে কাজ করছে বলে অভিযোগ। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা বিরক্ত। কেউ কেউ ভোট না দিয়েই কেন্দ্র থেকে চলে গেছেন।

নগরের ধরমপুর সমশের আলী মোল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটার আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেন, ইভিএম ঠিকমতো কাজ করছে না। তিনি চারবারের চেষ্টাতেও সব কটি ভোট দিতে পারেননি।

আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, একটি ভোট দেওয়ার পর বাকি দুটি ভোট দিতে পারেননি তিনি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা একটু পরে এসে ভোট দিয়ে যেতে বলেছেন। তবে তিনি আর ভোট দিতে আসবেন না। এখান থেকে কাজে চলে যাবেন। অনেক ভোটার অভিযোগ করেছেন, খুব ধীরগতিতে ভোট গ্রহণ চলছে। তাঁদের ধারণা, ইভিএম নষ্ট।

ইভিএমে ভোট গ্রহণে দেরি হওয়ায় এই কেন্দ্রের ভোটাররা বিরক্ত। উত্তেজিত। তাঁদের শান্ত করতে এগিয়ে আসেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক। তিনি  ইভিএম নষ্টের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, তার কেন্দ্রে প্রচুর ভোটার। দু-একজনের ক্ষেত্রে অসুবিধা হতেই পারে। ইভিএম ঠিক আছে।

নগরীর ডাঁশমারী উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রেও ইভিএমের ধীরগতি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন ভোটাররা। ফরজ আলী নামের এক ভোটার বেলা ১১টায় কেন্দ্রের সামনে লাইনে ছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল আট থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। তিন ঘণ্টা হয়ে গেল, লাইন একটুও এগোচ্ছে না। অনেকক্ষণ পর একজন করে ভেতরে ঢোকাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন মেশিন (ইভিএম) নষ্ট হয়ে গেছে।’

ফরজ আলীর মতো একই অভিযোগ ভোটার মকবুল হোসেন ও মো. আসলামের। দুজনেই ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাঁরাও সকাল ৮টায় ভোট দিতে এসেছেন। বেলা ১১টা পর্যন্ত তাঁরা ভোট দিতে পারেননি।

এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. নুর হোসেন বলেন, তাঁর একটি কক্ষের ইভিএম মনিটরে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। পরে ঠিক করা হয়েছে। ভোট গ্রহণে একটু ধীরগতি আছে। প্রথম দুই ঘণ্টায় ৩ হাজার ১৪৭ ভোটের মধ্যে ৫ শতাধিক ভোট পড়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।

নগরীর বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে ভোটাররা ভোট দিতে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। সকাল ১০টার পর অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা গেছে।