খালেদা জিয়া হাসপাতালে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে গুলশানের বাসভবন থেকে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁর স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে বৃহস্পতিবার আরও পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন।
বুধবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে হাসপাতালের সামনে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের জাহিদ হোসেন বলেছেন, খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে আনার পর তাঁর কিছু শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। পরে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা রাতে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, হাসপাতালে রেখেই আরও কিছু পরীক্ষা করা হবে।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা আবারও খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই শারীরিক কিছু জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এদিন হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এর আগে সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে তাঁর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। তিন দিন পর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে তিনি বাসায় ফিরেছিলেন।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদ্রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন। সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তাঁর স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় পর তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়েছিল।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।