৩০ লাখ মানুষের জন্য ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রহসন : বাম গণতান্ত্রিক জোট
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেছেন, সিলেট শহর ছাড়া দুই জেলায় কোথাও বিদ্যুৎ নেই। মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন, ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ। আশ্রয় কেন্দ্র অপ্রতুল। শিশু খাদ্য ও খাবার পানির তীব্র সংকট। মানুষ ও গবাদিপশুর একসঙ্গে বসবাস করছে। এতে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এই দুই জেলায়। এই পরিস্থিতিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের ৩০ লাখ মানুষের জন্য ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ বানভাসি মানুষের সঙ্গে প্রহসন।
মঙ্গলবার পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের বন্যাকবলিত জেলাগুলোকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাদের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বানভাসি সব মানুষকে সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার বা নৌকা দিয়ে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসতে হবে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় পর্যাপ্ত খাবার, শিশু খাদ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানি, ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সময় থেকে পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা আরও বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। ত্রাণ-পুনর্বাসনে দুর্নীতি-দলীয়করণ বন্ধ করা জরুরি। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর আড়ম্বরপূর্ণ উদ্বোধন অনুষ্ঠান স্থগিত করে ওই টাকা বন্যার্তদের ত্রাণ-পুনর্বাসনে ব্যয় করার দাবি জানান নেতারা।
ভারতের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অভিন্ন নদী সমস্যার সমাধান করার উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, বন্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়ন, বাঁধ-সড়ক নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টিকারী বাঁধ ও রাস্তা অপসারণ করতে হবে। নদী-খাল-জলাশয় ভরাট ও দখল-দূষণ বন্ধ করতে হবে। পাহাড়-টিলা-বন ধ্বংস বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্স, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, বাসদ (মার্কসবাদী) নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বাংলাদেশর সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি আবদুল আলী প্রমুখ।