১৫ লাখ টাকার চেক দিয়েও দলের মনোনয়ন না পাওয়ার অভিযোগ

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে কামাল উদ্দিন এই চেকের ছবিও যুক্ত করেন
ফেসবুক থেকে নেওয়া

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাইয়ে দিতে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম–৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদের নামে ১৫ লাখ টাকার চেক নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন এক যুবলীগ নেতা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এ অভিযোগ করেন দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ–আইনবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন। তিনি চট্টগ্রাম জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলিও। ফেসবুকের এ স্ট্যাটাস নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

কামাল উদ্দিন দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সোনাকানিয়াসহ সাতকানিয়ার ১৬টি ইউপিতে নির্বাচন হবে। গতকাল শুক্রবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এই মনোনয়নের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এম হোসেন কবির সাংসদের নামে চেক নেন বলে উল্লেখ করেন কামাল উদ্দিন। তবে গতকাল ফেসবুক আইডি গিয়ে স্ট্যাটাসটি আর দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে জানতে কামাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ।

এদিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় সাংসদের পক্ষে গত বৃহস্পতিবার রাতেই সাতকানিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সোহরাব হোসেন চৌধুরী এই জিডি করেন।

জিডিতে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়া মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনকে অভিযুক্ত করা হয়। তাতে বলা হয়, সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এম হোসেন কবিরের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির যে স্ট্যাটাস ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে, তা মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর।

সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার দে জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।’

এ ব্যাপারে সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে বলেন, ‘এটা ডাহা মিথ্যা, বানোয়াট। তাঁর বিরুদ্ধে আইসিটি মামলা হবে। তিনি এটা প্রতারণা করছেন আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য।’

কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করবেন বলে জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এম হোসেন কবিরও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘থানায় আমরা নির্দেশে সোহরাব হোসেন জিডি করেছেন। আমি রোববার একটি মানহানির মামলা করব। কামালের সঙ্গে আমার পাঁচ বছর ধরে যোগাযোগ নেই। আমার ও মোছলেম উদ্দিন আহমেদের নামে এটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ।’

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে কামাল উদ্দিন ১৫ লাখ টাকার একটি চেকের ছবিও যুক্ত করে দেন। এটি সোনালী ব্যাংক কোর্ট হিল শাখার একটি চেক। তাতে পে টু–এর স্থানে লেখা মোসলেম উদ্দিন আহমেদ। নিচের অংশে কামাল উদ্দিনের সই রয়েছে। তবে চেকে কোনো তারিখ ছিল না।

স্ট্যাটাসে কামাল উদ্দিন একপর্যায়ে লেখেন, ‘আমি আমার চেক ও টাকা ফেরত চাই। অন্যথায় বিষয়টি নিয়ে আমি তৃণমূলের আশা–ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল জননেত্রী শেখ হাসিনার দ্বারস্থ হব এবং ফৌজদারি মামলা করতে বাধ্য হব।’