বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, পদ্মা সেতুর বিচিত্রা অনুষ্ঠানের একজন শিল্পী পাবেন তিন কোটি টাকা। তাহলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামের ৫০ লাখ বানভাসি প্রত্যেক মানুষের জন্য এক থেকে দেড় টাকা বরাদ্দ কেন?
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ সোমবার এক প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে বিদেশে প্রেরণ এবং বন্যাদুর্গত অঞ্চলে দ্রুত সহায়তা পৌঁছানোর দাবিতে ‘গণতন্ত্র ফোরাম’ নামের একটি সংগঠন এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
এতে রিজভী বলেন, জনগণকে ক্ষুধা, অনাহারে ও পানিতে ডুবিয়ে রেখে ঝাড়বাতির আলোয় পদ্মা সেতু দেখালে এ দেশের মানুষ আর মেনে নেবে না।
বন্যার জন্য সরকারকে দায়ী করে রিজভী বলেন, ‘আমরা জানি রাষ্ট্রের একজন প্রধান কর্তা ব্যক্তির আত্মীয়স্বজন অপরিকল্পিতভাবে হাওরে বাঁধ দিয়েছেন। অপরিকল্পিতভাবে হাওরে রাস্তা নিয়ে গেছেন। এই অপরিকল্পিত বাঁধ ও রাস্তার জন্য ৫০-৬০ লাখ মানুষ পানিবন্দী।’
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা নিয়ে সরকারি পদক্ষেপেরও সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লুটেরা গোষ্ঠী যে টাকা পাচার করেছে, তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য টাকা বৈধ করার কথা বলা হচ্ছে।’
কারণ হিসেবে রিজভী বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজন যেসব দেশে টাকা রেখেছেন, সেসব দেশে ধরপাকড় হতে পারে। তারা এই টাকার উৎস জানতে চাইতে পারে। এই বিপদ থেকে রক্ষার জন্য এবং যাতে তাঁদের ক্ষতি না হয়, সে জন্য এই টাকা বৈধ করছেন অর্থমন্ত্রী।
বিদ্যুতের নামে কুইক রেন্টাল প্রজেক্টে লুটপাট হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী। তিনি বলেন, ‘ইমডেমনিটি (দায়মুক্তি) দিয়ে আপনার দলের লোকজনকে রেহাই দিয়েছেন যে বিদ্যুতের ব্যাপারে কোনো দুর্নীতির মামলা করা যাবে না।’
রিজভী বলেন, ‘এখন আপনারা আইন করছেন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য রাত আটটার পর কোনো দোকানপাট ও বিপণিবিতান খোলা রাখা যাবে না। কেন? ওই টাকাগুলো কোথায়? দেশে কোথাও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই বলেও দাবি করেন রিজভী।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, দেশের কোটি কোটি মানুষের জনপ্রিয় নেত্রীকে বিনা অপরাধে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাঁকে চিকিৎসা করাতে বিদেশে যেতে দেবেন না, এটি বাংলার মানুষ আর সহ্য করবে না।
প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন সুলতানা। এতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।