২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গুরুত্ব হারিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ফাইল ছবি

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এমন একটি সংস্থা, যারা নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রচণ্ডভাবে খর্ব করেছে ও পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়ে তাদের গুরুত্ব হারিয়েছে।

বৃহস্পতিবার নওগাঁ সার্কিট হাউসে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে নেতিবাচক মন্তব্য সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছিল, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তখন সেই বিচার বন্ধ করার জন্য মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছিল।

দেশে যখন মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করে বিএনপি–জামায়াতের নেতৃত্বে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার মহোৎসব চলেছে, তখন তারা কোনো বিবৃতি দেয় নাই। ফিলিস্তিনে যখন শিশুদের পাথর নিক্ষেপের প্রত্যুত্তরে ইসরায়েলি বাহিনী পাখি শিকারের মতো গুলি করে মানুষ শিকার করে, তখন অনেক ক্ষেত্রে তারা নিশ্চুপ ছিল।’

এসব কারণে ইতিমধ্যেই পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে চিহ্নিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কী বলল, সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু কিছু পত্রিকা আবার সেগুলো খুব গুরুত্ব দিয়ে ছাপায় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের রিপোর্ট পড়ে দেখলাম, এখান থেকে আইন ও সালিশ কেন্দ্র যেগুলো পাঠিয়েছে, সেগুলোই তারা হুবহু ছাপিয়েছে। সরকারের সমালোচনায় মুখর ও দেশবিরোধী অপতৎপরতায় যুক্ত নির্দিষ্ট দু–একটি সূত্র থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্ট পেশ করে, যা আসলে আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশবিশেষ, অন্য কিছু নয়।’

বিএনপির জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম-তালেবান সবাইকে নিয়ে বিএনপি একটি জোট গঠনের চেষ্টা করেছিল ও গঠনও করেছিল। কিন্তু সেই জোটের ফলাফল হচ্ছে নির্বাচনে মাত্র পাঁচটি আসন। এবারও তারা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন দলকে কাছে টানার চেষ্টা করছে। সে জন্য নির্বাচনের পর কোন ধরনের সরকার করবে, সেটি নিয়ে মির্জা ফখরুল সাহেব একটি বক্তব্য রেখেছেন। তারা তো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবে না বলছে। নির্বাচনের পর কী সরকার গঠন করবে, তার আগে নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, সেটি ফয়সালা করুক।’

‘মূল কথা হচ্ছে—বিএনপি নির্বাচনবিমুখ রাজনীতির কারণে জনগণ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে ও সে কারণে তারা নানাভাবে প্রাসঙ্গিক থাকার চেষ্টা করছে, কিন্তু সন্ত্রাস-পেট্রলবোমা-মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি, তালেবান-আশ্রয়ী রাজনীতি—এগুলো পরিহার করে তারা যদি জনগণের কাছে ক্ষমা না চায়, তারা কখনো জনগণের কাছাকাছি আসতে পারবে না’—বলেন হাছান মাহমুদ।

তথ্যমন্ত্রী এরপর নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলে বেড়াচ্ছে নিরপেক্ষ সরকার না হলে তারা নির্বাচনে আসবে না। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী আর কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। নির্বাচন সরকারের অধীনে হয় না। নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচন কমিশনার স্বাধীন। তাই স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে। আগামী নির্বাচনের ট্রেনে উঠবে কি উঠবে না, সেটি বিএনপির সিদ্ধান্তের ব্যাপার। নির্বাচনের ট্রেন কারও জন্য অপেক্ষা করবে না।’

নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

পরে পুনরায় আবদুল মালেককে সভাপতি ও সাধন চন্দ্র মজুমদারকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।