নির্বাচন কমিশন কি এ ভাষায় চিঠি লিখতে পারে, প্রশ্ন আ ক ম বাহাউদ্দিনের
কুমিল্লা-৬ আসনের (আদর্শ সদর, সিটি করপোরেশন, সেনানিবাস এলাকা) সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। বাহাউদ্দিন অভিযোগ করেছেন, সেই চিঠির ভাষা ঠিক ছিল না এবং তা এখতিয়ারবহির্ভূত। এ ছাড়া তিনি আইনটি সংসদ সদস্যরা করেননি, নির্বাচন কমিশনই করেছে বলে জানান।
আজ বুধবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বাহাউদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনের আইন মানতে হবে। আমি খুব দুঃখ পেয়েছি। একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, আমি আইন প্রণেতা হয়ে আইন ভঙ্গ করেছি। আমাকে কোথাও দেখেছেন নির্বাচনে?’
ইসি যে চিঠি দিয়েছে, তা এখতিয়ারবহির্ভূত এবং ভাষাগতভাবেও ঠিক হয়নি উল্লেখ করে কুমিল্লার এই সংসদ সদস্য বলেন, একজন জাতীয় সংসদ সদস্যকে এভাবে নির্দেশ শব্দ ব্যবহার করতে পারে না। চিঠিটা অসমাপ্ত ছিল। আইনের পুরো ব্যাখ্যা ছিল না। আইনটি নিয়ে সংসদে কথা বলবেন বলে জানান এবং তা সংশোধন করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা আইনটি করিনি, আইনটি করেছে নির্বাচন কমিশন। আইনটি সংসদে আসে না।’ এ ছাড়া আইনটি সম্পর্কে জানলে তিনি সংসদেই প্রতিবাদ করতেন বলে উল্লেখ করেন।
নির্বাচন কমিশনের চিঠি প্রসঙ্গে এই সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন, যাঁরা হলুদ সাংবাদিকতা করেন, তাঁরা এই চিঠি নিয়ে তাঁকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেছেন। ইসির চিঠিতে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, সেই ভাষায় লিখতে পারে কি না, সে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বাহাউদ্দিন আরও বলেন, ‘আইন অনুযায়ী, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। আমি সরকারের অংশ নই। আমি জাতীয় সংসদের অংশ। আমাকে এই আইনের আওতায় আটকে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ তবে চিঠিটি কুমিল্লার নির্বাচনকে অনেক এগিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চিঠির কারণে কুমিল্লার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে নৌকার পক্ষে ভোট দেবেন।
তিনি কুমিল্লায় না থাকলে ‘অশান্তি হয়’ বলে মন্তব্য করেন আ ক ম বাহাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কীভাবে যাব ? আমি চলে গলে মূর্তি ভেঙে দেয় কুমিল্লায়।’ গত বছর দুর্গাপূজার সময় সাম্প্রদায়িক হামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, তিনি সে সময় হজে গিয়েছিলেন ।কিন্তু হজ সংক্ষিপ্ত করে চলে আসেন। সে সময় কুমিল্লায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান তিনি।
উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হচ্ছে জানিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, কোথাও গন্ডগোল নেই, ঝামেলা নেই। অতি উৎসাহী কোনো কর্মকর্তা যেন পরিবেশ নষ্ট না করেন। প্রার্থী, সমর্থক উৎসবমুখর পরিবেশে আছে। ১০-১২ জন ছেলেপেলে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকলে অতি উৎসাহী কোনো কর্মকর্তা যেন তাদের হেনস্তা না করেন। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে তারা কাজে নামবে।
কিছু জায়গায় ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি বলে এই সংসদ সদস্য অভিযোগও করেন। তিনি বলেন, ভোটার আইডি নিয়ে গেছেন কিন্তু স্লিপ নিয়ে যাননি। তাই ভোট দিতে দেয়নি। ভোটারের চিঠি তো ভোটের অংশ না। ম্যাজিস্ট্রেট আইডি আটকে রেখেছেন। তিনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন সফল করতে তাঁরা যেন সহযোগিতা করেন। এ ছাড়া তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়েছেন এবং নৌকাই বিজয়ী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।