চট্টগ্রামে যুবলীগের সম্মেলনে সড়ক বন্ধ, ভোগান্তিতে রোগী ও স্বজনেরা
চট্টগ্রাম নগরের গোলপাহাড় মোড় থেকে বেলা সোয়া একটার দিকে ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগমকে নিয়ে হেঁটে আসছিলেন দুই নারী-পুরুষ। যাবেন পৌনে এক কিলোমিটার দূরে ও আর নিজাম সড়কের শেভরন রোগনির্ণয় কেন্দ্রে। এ রোগনির্ণয় কেন্দ্রের পাশের একটি কনভেনশন সেন্টারে আজ সোমবার চলছে নগর যুবলীগের সম্মেলন। এ কারণে সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে গন্তব্যের আগেই তাঁদের অটোরিকশা থেকে নেমে যেতে হয়েছে।
হেঁটে আসায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই বৃদ্ধাসহ তিনজন। বৃদ্ধার সঙ্গে থাকা স্বজন বদিউল আলম বলেন, ‘অনেক দূর থেকে হেঁটে এখানে এসেছি। খুব কষ্ট হয়েছে। কিন্তু কী আর করব? ডাক্তার তো দেখাতে হবে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, সম্মেলনের কারণে আজ ভোর থেকেই ও আর নিজাম সড়কের প্রবর্তক মোড় থেকে পাঁচলাইশ থানার মোড় পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। সড়কের কয়েক স্থানে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। আটকে দেওয়া হয়েছে সড়কটির সঙ্গে সংযুক্ত সব গলিও। এই সড়ক ও আশপাশে ১৫টির মতো হাসপাতাল ও রোগনির্ণয় কেন্দ্র রয়েছে।
বেলা সাড়ে তিনটায় প্রবর্তক মোড়ের দিক থেকে হেঁটে আসছিলেন বিবি ফাতেমা। তাঁকে ধরে ছিলেন আরেকজন নারী। ফাতেমা খোঁড়াচ্ছিলেন। কোমরে বেল্ট বাঁধা। তিনি বলেন, ‘মেডিকেলের সামনে থেকে হেঁটে হেঁটে আসছি। শেভরনে পরীক্ষা করাতে যেতে হচ্ছে। উপায় নেই।’
ফটিকছড়ির দেলোয়ার হোসেনের ডান চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে শেভরন আই ক্লিনিকে। চোখে ব্যান্ডেজ নিয়ে দুপুরে সেখান থেকে ফিরছিলেন। দেলোয়ার বলেন, ‘চোখে ব্যান্ডেজ নিয়ে এভাবে কি হাঁটা যায়? কী করব কপাল খারাপ। আর কতক্ষণ হাঁটতে হবে জানি না।’
শুধু রোগী নয়, ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকেও। নগরের পাথরঘাটার সেন্ট স্কলাসটিকা স্কুল থেকে মেয়েকে নিয়ে ফিরছিলেন রূপা নামের এক নারী। তিনি বলেন, ‘পাঁচলাইশ থানার মোড়ে নামিয়ে দিয়েছেন রিকশাচালক। এরপর হেঁটে বাসায় ফিরছি।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার আরফাতুল ইসলাম বলেন, সম্মেলনের নিরাপত্তার জন্য প্রবর্তক মোড় থেকে পাঁচলাইশ থানা পর্যন্ত সড়কটি বন্ধ রয়েছে। তবে রোগীদের বহনকারী গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
ভোগান্তির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে যুবলীগের নগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের চাপ সামলাতে তাঁরা পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। পুলিশ সড়কটি বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়। তবে হাসপাতালগুলোতে রোগীরা যেন যেতে পারেন, সে ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছিল। তারপরও কিছুটা ভোগান্তি হয়তো হয়েছে।’