আগামীকাল থেকে ক্লিন ফিড না চালালে মোবাইল কোর্ট: তথ্যমন্ত্রী

বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার বা ক্লিন ফিড বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ পদক্ষেপের জন্য তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন জানিয়েছে বিজেসি
ছবি: সংগৃহীত

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, কাল থেকে ক্লিন ফিড (বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার) আসা সত্ত্বেও চালানো না হলে, সেটার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত চলবে। অন্যান্য কেব্‌ল অপারেটিংয়ের শর্তও যদি কেউ না মানে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেব্‌ল অপারেটিং লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী দেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক; এমন কিছু চালানো যায় না স্মরণ করিয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, কেউ ক্লিন ফিড পাঠালেও এমন কিছু যা সমাজ ও পরিবারে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বা ছেলেমেয়েদের বিপথে ঠেলে দিতে পারে, এ ধরনের কনটেন্ট যাতে না যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে হাছান মাহমুদের সঙ্গে বিজেসি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার বা ক্লিন ফিড বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ পদক্ষেপের জন্য তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন জানিয়েছে দেশের সম্প্রচার সাংবাদিকদের বৃহত্তম সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)। এ সময় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান উপস্থিত ছিলেন। বিজেসি ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক, সদস্যদের মধ্যে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, রাশেদ আহমেদ, দীপ আজাদ, মানস ঘোষ, হারুন অর রশীদ, সাইফ ইসলাম দিলাল, ফাহিম আহমেদ, নূর সাফা জুলহাস, রাহুল রাহা, মামুনুর রহমান খান প্রমুখ বৈঠকে যোগ দেন।

আইন কার্যকর করতে সরকার বদ্ধপরিকর এবং এ নিয়ে কেউ বিভ্রান্তি ছড়ালে সেটির বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন, দেশে অনেক চ্যানেলে ক্লিন ফিড আসে, সেগুলো প্রথমে কেউ চালাননি, এখন অনেকেই চালানো শুরু করেছেন। আমরা আজকেও সময় দিচ্ছি সেগুলো চালানোর জন্য। আগামীকাল থেকে ক্লিন ফিড আসা সত্ত্বেও চালানো না হলে, সেটার জন্য মোবাইল কোর্ট চলবে। অন্যান্য কেব্‌ল অপারেটিংয়ের শর্তও যদি কেউ না মানে, মোবাইল কোর্টের আওতায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তথ্যমন্ত্রী বিজেসিকে তাঁদের অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ‘আমরা দেশের স্বার্থে আইন কার্যকর করেছি, গণমাধ্যমের স্বার্থে, গণমাধ্যমের সাথে যুক্ত সাংবাদিক, শিল্পী-কলাকুশলী সবার স্বার্থে এবং এ আইন সমগ্র পৃথিবীতে আছে। প্রতিবেশী সকল দেশে এই আইন অনেক আগেই কার্যকর হয়েছে। আমাদের দেশে একটি মহল নানা অজুহাতে এ আইন কার্যকর করতে দেয়নি। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই এবং আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশির ভাগ মন্তব্যই এই সিদ্ধান্তের পক্ষে দেখি।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সকল সাংবাদিক এই সিদ্ধান্তের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, যাঁরা টেলিভিশনের মালিক তাঁরা দাঁড়িয়েছেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট এর পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন। সুতরাং কেউ এটি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। শুধুমাত্র একটি পক্ষই বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তা নয়; সেটিকে পুঁজি করে আরও কেউ কেউ বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করেছিল। সেগুলো হালে পানি পায়নি।’

ক্লিন ফিড নিয়ে অন্য দেশগুলো কত যত্নবান, সেই উদাহরণ তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ টেলিভিশন ভারতে এবং দূরদর্শন এ দেশে সম্প্রচার হয়। ভুলক্রমে একবার বিটিভির ইত্যাদি অনুষ্ঠানের ফিডে একটি বিজ্ঞাপন ছিল, সাথে সাথে তারা সম্প্রচার থামিয়ে আমাদেরকে নোটিশ করেছিল।

নেপালে এ আইন কার্যকর করার সময় নানা পক্ষ বিরোধিতা করেছিল, এখন নেপালের মতো দেশেও সংশ্লিষ্ট চ্যানেলগুলো ক্লিন ফিড পাঠায় আর আমাদের এখানে পাঠাত না। আমাদের এখানে তাদের পক্ষে ওকালতি করার একটা পক্ষ ছিল। কিন্তু এখন সেটি করতে হবেই।’

মন্ত্রী এ সময় গণমাধ্যমকর্মী আইন দ্রুততম সময়ে পাস করা এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নীতিমালা ও আইপিটিভি নির্দেশিকা দ্রুত প্রণয়নে মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানান।