দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার কারণ এবং হামলায় মদদদাতাদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমি আগেই বলেছি, অপরাধী আমার চোখে অপরাধী। সে কোন দলের কে, কী, আমি কিন্তু সেটা বিচার করি না। সেটা আপনারা দেখেছেন।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদের করা এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকালে সংসদের বৈঠক শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব দিয়ে। এ সময় সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ২ সেপ্টেম্বর রাতে ঘোড়াঘাট উপজেলায় ইউএনও ও তাঁর বাবাকে বাসভবনে ঢুকে হামলা করে গুরুতর আহত করা হয়।
ইউএনওর ওপর হামলার বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইতিমধ্যে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চুরি করার জন্য হামলার কথা বলা হচ্ছে। তবে শুধু চুরি নয়, এর সঙ্গে আরও কী কী ঘটনা থাকতে, পারে সেগুলোও কিন্তু যথাযথভাবে দেখা হচ্ছে।
অপরাধীদের বিচার হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে দেখি। সেখানে যদি আমার দলেরও লোক হয়, সমর্থক হয়, তাকেও আমি ছাড়ি না, ছাড়ব না—এটা হলো আমার নীতি। সেই নীতি নিয়ে আমি চলছি। ইতিমধ্যে তদন্ত করা হচ্ছে, ধরা পড়েছে। পাশাপাশি আরও তদন্ত করা হচ্ছে যে এই ঘটনার মূলে কী আছে? কেন এই ধরনের একটা ঘটনা ঘটল? এটা খুব ভালোভাবেই তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে কোনো ঘাটতি নেই এবং ঘাটতি হবে না। অপরাধী ঠিকই শাস্তি পাবে। সেই ব্যবস্থা করব, অন্তত এইটুকু আমি বলতে পারি।’
হারুনুর রশীদ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে উত্তর চাইলে তিনি অতীত নিয়ে বলেন। ১৪ বছর বা ২০ বছর পেছনের অতীত টানার দরকার নেই। ১৪ বছর ধরে বিএনপি ক্ষমতায় নেই। আওয়ামী লীগই ক্ষমতায়। এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বললে মনে হয় বেশি ভালো হবে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েই আগামী দিনে চলার পথ নির্দিষ্ট করতে হবে। তা না হলে শিক্ষা হয় না। সে কারণেই অতীতকে স্মরণ করতে হয়।’
টিকা কেনাসহ করোনা মোকাবিলায় উদ্যোগ
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় দ্রুত কোভিড-১৯–এর টিকা কেনার জন্য অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, গত মে-জুন মাসে জরুরি ভিত্তিতে ২ হাজার চিকিৎসক, ৫ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স, ৩৮১ জন ফার্মাসিস্ট এবং জুলাইয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় ২০২ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ২ হাজার চিকিৎসক, ২ হাজার ৫৫০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ১ হাজার ৮৫০ জন মিডওয়াইফারি নিয়োগের কার্যক্রম চলছে।