বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কালে ‘নিখোঁজ’ রাজনৈতিক কর্মী, সন্দেহভাজন জঙ্গি বা অপরাধী, সাংবাদিক, গবেষক, প্রকাশক, ব্যবসায়ী এবং ছাত্রদের প্রায় প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই এক অদ্ভুত মিল দেখা যাচ্ছে। কথিত বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের মতোই একই ধরনের কিছু উপসর্গ বা আলামত এ ক্ষেত্রে উপস্থিত। যাঁরা গুম হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই আলামতগুলো একই রকম।
বেঁচে ফিরে আসার সৌভাগ্য যাঁদের হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও অপহৃত হওয়ার যেমন বিবরণ পাওয়া যায়, যাঁরা এখনো ফেরেননি কিংবা ফিরেছেন লাশ হয়ে, তাঁদেরও হারিয়ে যাওয়ার বিবরণ একই ধরনের। তাঁদের তুলে নেওয়ার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট—যাঁরা তুলে নিয়ে গেছেন, তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েই তা করেছেন। কোথাও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখানো এবং পরোয়ানা তামিল করার নিয়ম অনুসরণ করার কথা শোনা যায়নি। অতি সম্প্রতি সাংবাদিক উৎপল দাস ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মোবাশ্বার হাসানের অন্তর্ধান পর্বগুলো আরও রহস্যজনক। কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে তাঁরা হারিয়ে গেলেন তার কোনো বিবরণ মিলছে না।
যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের মধ্যে দেশের অন্যতম বড় ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ রায় ছাড়া আর সবাই অপহরণ পর্বের বিষয়ে বাক্রুদ্ধ থেকেছেন। আতঙ্ক তাঁদের পরিবারকেও যেভাবে গ্রাস করেছে, তাতে আত্মীয়-পরিজনেরাও মুখ বন্ধ রেখেছেন এবং ভুক্তভোগীকে কিছু বলা থেকে নিবৃত্ত করেছেন। পরিবেশবাদী আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী আবু বকর সিদ্দিক কিংবা তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করা পরামর্শক তানভির হাসান জোহার কথা এখানে উল্লেখ করা যায়। আবু বকর সিদ্দিক ২০১৪ সালের এপ্রিলে অপহৃত হওয়ার তিন দিন পর ছাড়া পেয়েছিলেন, আর জোহা ২০১৬ সালের মার্চে সপ্তাহখানেক নিখোঁজ থাকার পর মুক্তি পান। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ফাঁসি হওয়া বিতর্কিত রাজনীতিক সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীও দীর্ঘ কয়েক মাসের অর্ন্তধানের বিষয়ে কোথাও কোনো কথা বলেননি। একমাত্র কবি-লেখক ফরহাদ মজহার ছাড়া পুলিশও আর কারও অন্তর্ধান রহস্যের ব্যাখ্যা দেয়নি।
২০১২ সালে গুম হয়েছিলেন পোশাকশিল্পের শ্রমিকনেতা আমিনুল ইসলাম। অপহরণের দুই দিন পর তাঁর লাশ পাওয়া যায়, কিন্তু এখনো রহস্যের কিনারা হয়নি। ইতিমধ্যে রাজনীতিকদের আরও কয়েকজন গুম হয়েছেন, তাঁদের কোনো সন্ধান মেলেনি। তাঁদের অধিকাংশই জামায়াত ও বিএনপির হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও দু-চারজন রয়েছেন।
গুম বিষয়ে সরকারের বক্তব্য তার আগের মেয়াদেও যা ছিল, এখনো তাই আছে। সরকারের প্রথম কথা, দেশে গুম বলে কিছু নেই। দ্বিতীয় যে কথাটি সবচেয়ে বেশি শোনা যায় তা হলো সরকারকে বিব্রত করতে এটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কৌশল এবং কথিত ‘গুমের শিকার’ ব্যক্তি আসলে আত্মগোপন করেছেন। কেউ কেউ পাওনাদারদের থেকে রক্ষা পেতেও স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকছেন। তৃতীয় যে কথাটি সরকারের কাছ থেকে শোনা যায়, সেটি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
সরকারের এসব কথার বিশ্বাসযোগ্যতা এখন প্রায় শূন্যের কোঠায়। পাওনাদারদের এড়াতে ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেলেও যেতে পারেন, কিন্তু রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ক্ষেত্রে এমন নজির বিরল। আবার সরকারকে বিব্রত করতে বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলী এখনো পালিয়ে আছেন, কিংবা সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন ভারতে গিয়ে স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে নিজেকে তুলে দিয়েছেন এমন কথা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকেরা বিশ্বাস করলেও অন্য কারও কাছেই তা গ্রহণযোগ্য নয়। একইভাবে একজন প্রতিষ্ঠিত শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, যাঁর সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ঠতার কথা সর্বজনবিদিত, কিংবা ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নে নির্বাচিত কোনো পৌর মেয়র সরকারকে বিব্রত করতে গা ঢাকা দেবেন এমন যুক্তি হাস্যকর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে উদ্ধারের চেষ্টা করছে বলে বারবার বলা হলেও উদ্ধারের দৃষ্টান্তও তেমন একটা নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপহরণকারীরাই অপহৃত ব্যক্তিকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে।
অতিসম্প্রতি অবশ্য নতুন একটি কথা শোনা গেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে। তিনি বলেছেন, ‘নিখোঁজ ব্যক্তিরা শিগগিরই ফিরবেন।’ তাঁর ওই মন্তব্যের আগেই পুলিশ বিজেপির দুজন নেতাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেয়, যাঁরা প্রায় সপ্তাহখানেক নিখোঁজ ছিলেন এবং যাঁদের পরিবার স্পষ্ট করেই বলেছে, পুলিশ তাঁদের উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর ফিরলেন অনিরুদ্ধ রায়—যাঁকে উদ্ধারের জন্য তাঁর টরন্টোপ্রবাসী ভাই কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে চিঠি দিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিন্হার প্রতি সরকারের কথিত অন্যায় আচরণের কথাও উল্লেখ করেছিলেন। কথা উঠেছিল এস কে সিন্হার সঙ্গে অনিরুদ্ধর ঘনিষ্ঠ পরিচয় এবং যোগাযোগ ছিল। তবে আড়াই মাস পর মুক্ত হয়ে তিনি তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশে কোনো একজন ব্যক্তি কি রাষ্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী যে তিনি পুলিশ-গোয়েন্দা-সরকার সবাইকে এড়িয়ে একজন বহুল প্রতিষ্ঠিত সিআইপি ব্যবসায়ীকে আড়াই মাস অজ্ঞাত স্থানে জিম্মি করে রাখতে পারেন?
সরকারের ভাষায় ‘নিখোঁজ বা রহস্যজনক আত্মগোপন’ এবং মানবাধিকারকর্মীদের বর্ণনায় ‘গুম’ এই দুইয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্যরেখা টানা সাধারণ মানুষের জন্য খুবই কঠিন। ‘গুম’-এর একটি সংজ্ঞা ঠিক করেছে জাতিসংঘ। ইংরেজিকে একে বলা হচ্ছে এনফোর্সড বা ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স। ১৯৯২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ গুম থেকে সব ব্যক্তির সুরক্ষা পাওয়ার বিষয়ে একটি ঘোষণা অনুমোদন করে এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যরাষ্ট্রের অনুস্বাক্ষরের পর ২০১০ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে তা একটি সনদ হিসেবে কার্যকর হয়েছে। কোন অবস্থা গুম হিসেবে গণ্য হবে তার সংজ্ঞায় তিনটি উপাদানের কথা বলা হয়েছে: প্রথমত, ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তির মুক্তভাবে কিছু করার স্বাধীনতা হরণ করা; দ্বিতীয়ত, সরকারি কর্মকর্তাদের জড়িত থাকা, অন্তত তাঁদের জ্ঞাতসারে এটি হওয়া; এবং অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ব্যক্তির ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণের বিষয়টি অস্বীকার কিংবা তা গোপন রাখা। বাংলাদেশে সরকার যেহেতু আজ পর্যন্ত একটি ঘটনাতেও তার কোনো ধরনের ভূমিকা স্বীকার করেনি, সেহেতু তারা দাবি করতেই পারে যে গুম বলে কোনো কিছু এ দেশে ঘটে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারের কোনো না কোনো সংস্থার সদস্যদের জড়িত থাকার প্রমাণ এবং আলামতের কথা ভুক্তভোগীদের পরিবার এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা করে আসছেন। সুতরাং সরকারের অস্বীকৃতি এ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের পরিবারগুলোর দাবিকেই আরও জোরালো ভিত্তি দিচ্ছে।
সরকারের দাবির প্রতি অবিশ্বাস যে শুধু দেশের ভেতরেই সীমাবদ্ধ তা নয়। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি (দ্য ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস) আছে যাদের ম্যান্ডেট হচ্ছে শুধু গুমের অভিযোগগুলো অনুসন্ধান ও বিবেচনা করা। তাদের কাজ হচ্ছে হাওয়া হয়ে যাওয়া ব্যক্তির সন্ধানকাজে তার পরিবারকে সহায়তা করা। এই কমিটি গত সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে ২০১৬ সালের মে থেকে ২০১৭ সালের মে পর্যন্ত সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গুমের ঘটনাগুলোর বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পেশ করে। ওই প্রতিবেদনে তারা বলেছে যে বাংলাদেশ থেকে নতুন গুমের অভিযোগ আসা বাড়তে থাকায় এবং এসব অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে কোনো জবাব না আসায় তারা উদ্বিগ্ন। এতে কোনো অবস্থাতেই যে গুম গ্রহণযোগ্য নয়, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। গুমবিষয়ক সনদের ১০(২) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে এতে বলা হয় যে আটক ব্যক্তিকে কোথায় কীভাবে আটক রাখা হয়েছে, তা তার পরিবারকে দ্রুততম সময়ে জানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
প্রতিবেদনে এরপর কমিটি দুটি চিঠির জবাব না পাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে। একটি চিঠি ২০১১ সালের মে মাসের ৪ তারিখে দেওয়া হয়েছিল। যেখানে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অহরহই গুমকে একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আর ২০১৬ সালের ৯ মার্চ দেওয়া অপর চিঠিতে গুমের ঘটনার অভিযোগ আতঙ্কজনকভাবে বাড়ার কথা বলা হয়েছিল। কমিটি বাংলাদেশে নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং আইনপ্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে বলে আরও একটি সাধারণ অভিযোগের কথা জানিয়ে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে এ বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি আবারও একটি চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এরপর ওই কমিটি তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সরেজমিনে পরিস্থিতি জানার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সফরের জন্য ২০১৩ সালের ১২ মার্চ তারা সরকারকে একটি চিঠি দিয়েছে এবং সেই চিঠির জবাবের জন্য ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর, ২০১৫ সালের ২৭ নভেম্বর এবং ২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর আলাদা চিঠিতে তাগিদ দিয়েছে। কিন্তু এগুলোর কোনোটিরই জবাব মেলেনি। তাদের প্রতিবেদনে দেশওয়ারি বিভিন্ন দেশের যেসব পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালের মে মাসে তাদের কাছে বাংলাদেশে গুমের অভিযোগ ছিল ৩৪টি এবং ২০১৭-এর মে মাসে ওই অভিযোগের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯-এ। (প্রথম আলোয় ২০ নভেম্বর প্রকাশিত এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের হিসাবে সংখ্যাগুলো আরও বেশি।) দেশে যদি গুম নাই ঘটে তাহলে জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানাতে সরকারের এত দ্বিধা কেন? তাদের কাছে প্রকাশ পেয়ে যাবে এমন কোনো নোংরা কিছু কি কেউ লুকিয়ে রেখেছে?
মানবাধিকার নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা এখন এক নতুন উদ্বেগের কথা বলছেন। তাঁদের আশঙ্কা, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো একসময়ে ফৌজদারি আইনের ৫৪ ধারায় সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করে ১৬৭ ধারায় পুলিশি হেফাজতে বা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন কৌশল (কথিত মতে নির্যাতন) প্রয়োগ করে স্বীকারোক্তি আদায় এবং সাক্ষ্য–প্রমাণ জোগাড় করতে পারত। কিন্তু ২০১৬ সালের ২৪ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি সিদ্ধান্তের পর তারা আর ফৌজদারি আইনের ৫৪ ও ১৬৭ ধারার যথেচ্ছ প্রয়োগ করতে পারছে না। ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট প্রথম ওই দুই ফৌজদারি বিধির অপপ্রয়োগ নিষিদ্ধ করে কিছু নির্দেশনা জারি করেন। ১৯৯৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শামীম রেজা রুবেল পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনে মারা যাওয়ার পর গণ–আন্দোলনের মুখে সরকার যে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করে, সেই কমিশনই আসলে ওই দুই আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধে কিছু সংস্কারের সুপারিশ করে। কিন্তু পাঁচ বছরেও সরকার সেই সুপারিশ বাস্তবায়নের পথে না যাওয়ায় হাইকোর্টে জনস্বার্থমূলক একটি রিট আবেদন করে বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট। সেই মামলার পরিণতিতেই ৫৪ ও ১৬৭ ধারার যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ আসে।
এখন ৫৪ ধারার বদলে যদি গুমকে কোনো সংস্থা হাতিয়ার করতে চায়, তাহলে তা হবে সত্যিই দুর্ভাগ্যের বিষয়। অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে নির্যাতন করে বা ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তিতে রাজি করিয়ে তবেই গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নও উঠছে। আইনবহির্ভূত কোনো কৌশল অপরাধ দমনেও যেমন কাঙ্ক্ষিত নয়, তেমনি সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রেও তা সমর্থনযোগ্য নয়। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় মানবাধিকারের স্বীকৃতি এবং আইনের শাসন শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়, তা অবশ্যই অনুসরণীয়। আর সে কথাটি গত সপ্তাহেই (১৬ নভেম্বর) লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে এক বক্তৃতায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
কামাল আহমেদ: সাংবাদিক।