গত আগস্টে দেশে আসা প্রবাসী আয় বেশ বড় পরিমাণে কমেছে। গত বছরের আগস্টের তুলনায় ২১.৫৬ শতাংশ আয় কম এসেছে। যা আমাদের রেমিট্যান্সনির্ভর অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ।
একদিকে বণিক শ্রেণি ওভার ইনভয়েসের আড়ালে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করছে, রপ্তানির ক্ষেত্রে আন্ডার ইনভয়েস করে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে কম নিয়ে আসছে। অন্যদিকে খেটে খাওয়া প্রবাসীগণ দেশের অর্থনীতিকে যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে থাকেন দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই প্রবাসী শ্রমিকরাই দেশে ফেরার পথে বিমানবন্দরে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন।
সরকার টাকার মূল্য ধরে রাখতে ডিপ্রেসিয়েশন (খোলা বাজারে স্বাভাবিকভাবে নির্ধারিত মুদ্রার বিনিময় হার) পরিহার করে ডিভ্যালুয়েশন (সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মুদ্রার বিনিময় হার) নীতি গ্রহণ করেছেন। ফলস্বরূপ, খোলা বাজারের সাথে সরকার নির্ধারিত রেটের ব্যবধান ডলার প্রতি ১০-১২ টাকা। যেখানে খোলা বাজারে ডলার কেনা-বেচা হয় ১১৭-১১৮ টাকায় সেখানে সরকারি রেট ডলার প্রতি ১০৯.৫ টাকা। অতএব, ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে প্রবাসী শ্রমিকগণ ডালার প্রতি ১০-১২ টাকা কম পেয়ে থাকেন। যা উচ্চমূল্যের এই বাজারে গরিব প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য বেশ বড় অঙ্কের টাকা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁরা হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে, বিমানবন্দরে এসে বাজেভাবে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়ে, ডলার প্রতি ১০-১২ টাকা কম নিয়ে কেন দেশপ্রেম দেখাতে চাইবেন? কেন??
হুন্ডিতে ডলার রেট ১১৮ টাকা হওয়ায় স্বভাবতই অনেক প্রবাসী তাই হুন্ডিকেই বেছে নিয়েছেন। হুন্ডি দূর করতে সরকারের উচিত হবে ডিভ্যালুয়েশন (সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মুদ্রার বিনিময় হার) পরিহার করে ডিপ্রেসিয়েশনকেই (খোলা বাজারে স্বাভাবিকভাবে নির্ধারিত মুদ্রার বিনিময় হার) বেছে নেওয়া।
আমি প্রবাসীদের বৈধ পথে টাকা পাঠাতে নিরুৎসাহিত করছি না। শ্রদ্ধা জানাতে চাই সেই সকল প্রবাসীদের যারা এখনো ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাচ্ছেন।
পরিশেষে বলতে চাই, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠান দেশের মৃতপ্রায় অর্থনীতিকে বাঁচান।
মো. নাছির উদ্দিন
শিক্ষার্থী, মাস্টার্স ১ম বর্ষ, অর্থনীতি বিভাগ।
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর