ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনের পর দিন শব্দদূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। দিনের পর দিন ক্যাম্পাসে বহিরাগত ও পাবলিক যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে দুর্ঘটনাসহ নানা রকম ঝুঁকির মুখে পড়তে হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনাও নতুন নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং সেরা বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিত। ১৯২১ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে দেশের বিভিন্ন অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন ঢাবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দিন দিন বহিরাগতদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাবি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে বহিরাগতদের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় প্রায় সময়ই যানজট লেগে থাকে।
এখন বইমেলা চলছে বলে এ সমস্যা দ্বিগুণ হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া টিএসসিতে প্রায় সারা বছর কোনো না কোনো অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। এই এলাকায় রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল ও জগন্নাথ হলের অবস্থান হওয়ায় এসব হলের আবাসিক ছাত্ররা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাঁদের পড়ালেখা, ঘুমসহ বিভিন্ন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। সমস্যা আরও তীব্র হচ্ছে, যখন তাঁদের কোনো পরীক্ষা চলছে। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে তাঁরা পড়তে পারছেন না। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি টিএসসির কাছে হওয়ায় সেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এ সমস্যার শিকার হচ্ছেন। অধ্যাপক তাঁর পাঠদানের সময় বাধা অনুভব করছেন। একটি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শব্দের তীব্রতার পরিমাণ ৪৫ ডেসিবেল পর্যন্ত হওয়ার কথা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে ঢাবি ক্যাম্পাসে এই পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি।
সমগ্র ঢাকা শহরে শব্দদূষণ খুবই পরিচিত ঘটনা। কিন্তু যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তা বিশাল সমস্যার কারণ। এ ছাড়া হাসপাতালের রোগীও এই সমস্যা দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারেন। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রাচীন বিদ্যাপীঠ হওয়ায় দেশ–বিদেশ থেকে বহু দর্শনার্থী এর নান্দনিক স্থাপত্য দেখতে এখানে আসেন। এটি অবশ্যই একটা গর্বের কথা। কিন্তু সবকিছুরই একটা সীমা থাকার দরকার আছে। অনাকাঙ্ক্ষিত বহিরাগতদের চলাচলের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জটিল সমস্যার মুখে পড়ছেন।
দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র কিন্তু অন্য রকম। সেখানে এত বহিরাগত ঢুকে পড়ে না বা এত যানবাহনও নেই। ঢাকা শহরে দূষণ বা শব্দদূষণ নতুন নয়। কিন্তু এটি যে মোটেও শিক্ষার্থীবান্ধব নয়, তা বোঝা যায়। এ বিষয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ তীব্র, তা খুবই স্পষ্ট। এ সমস্যা সমাধানে ঢাবি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তাঁরা।
অঙ্কন বিশ্বাস
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।