আশার আলো হতে পারে নৈশ বিদ্যালয়

বাংলাদেশে নৈশ বিদ্যালয়গুলো এমন ধরনের বিদ্যালয় যেখানে সন্ধ্যায় বা রাতে ক্লাস করানো হয়। যারা দিনের বেলা কাজ করে তাদের জন্য বা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই স্কুল পরিচালনা করা হয়। এটি এক ধরনের কমিউনিটি স্কুল বা কলেজ। যারা নৈশ বিদ্যালয় থেকে পাশ করেন তারা স্নাতকের জন্য ভর্তি হতে পারেন।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২০ সালের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে মোট ১,১৪৭টি নৈশ বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৮২৭টি সরকারি এবং ৩২০টি বেসরকারি।

বাংলাদেশে নৈশ বিদ্যালয়ের অবস্থা বেশ ভালো নয়। এই বিদ্যালয়গুলো সাধারণত দিনের বেলা অন্য কোনো বিদ্যালয়ের ভবন বা কক্ষ ব্যবহার করে থাকে। তাই এই বিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব সুবিধা বা সম্পদ খুব কম। এই বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের অভাব, শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি, পাঠ্যবই বা অন্যান্য শিক্ষামূলক উপকরণের অভাব, শিক্ষার মানের অভাব, পরীক্ষার নিয়মনীতির অনিয়ম, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের অভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়।

বাংলাদেশে নৈশ বিদ্যালয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। এই বিদ্যালয়গুলো দেশের অশিক্ষিত ও নির্বাহী মানুষের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে দেয়। এই বিদ্যালয়গুলোতে যারা ভর্তি হয় তারা দিনের বেলা নিজের জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করতে পারে এবং রাতে শিক্ষা লাভ করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় তারা নিজেদের জ্ঞান, দক্ষতা, স্বাধীনতা ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব বৃদ্ধি করতে পারে। এই বিদ্যালয়গুলো দেশের শিক্ষার হার, সাক্ষরতার হার, মানবসম্পদের উন্নয়ন, গরিব শিক্ষার অধিকার, সমান শিক্ষার সুবিধা, সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে।
বাংলাদেশে নৈশ বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

নৈশ বিদ্যালয়গুলোর জন্য নিজস্ব ভবন বা কক্ষ নির্ধারণ করা উচিত, যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ করা উচিত। পাঠ্যবই ও অন্যান্য শিক্ষামূলক উপকরণ প্রদান করা উচিত। শিক্ষার মান ও নিয়মনীতি উন্নত করা উচিত, শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি কমানোর জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, মতামত, প্রশ্ন, সমস্যা ও প্রতিকারের জন্য একটি সহজ ও কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা উচিত। শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি, ঋণ, বিশেষ সুবিধা, সহযোগিতা, পরামর্শ, নির্দেশনা ইত্যাদি প্রদান করা উচিত।

এই পরামর্শগুলো যদি মেনে চলা হয় তাহলে বাংলাদেশে নৈশ বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও সম্ভাবনা বাড়তে পারে।   ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

রাজিন হাসান
শিক্ষার্থী, নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনা।