নিত্যপণ্য কিনতে দিশাহারা অবস্থা গ্রামের স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের। শহরকে ছাড়িয়ে গ্রামের হাটবাজারে চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপণ্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শহরের চেয়ে গ্রামে নিত্যপণ্যের দাম কম হওয়াটা স্বাভাবিক ছিল। কারণ, গ্রামে উৎপাদিত হয়ে সবকিছু শহরে আসে। দেশের উৎপাদিত মোট খাদ্যশস্যের বেশিরভাগই আসে গ্রাম থেকে। গ্রাম থেকে শহরে পণ্য পরিবহন খরচের জন্য পণ্যের দাম বেশি পড়ে যায়। ফলে জিনিসের দাম শহরে কিছুটা বেশি হতে পারে, কিন্তু গ্রামে সে হিসেবে কম থাকার কথা।
সরকার গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকার প্রথম সারির পণ্যগুলো, যেমন ডিম, আলু, পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল। ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি হালি ৪৮ টাকা, আলু ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। কিন্তু এটা বাস্তবায়িত হয়েছে কতটুকু?
শহরে নিয়মিত খাদ্য অধিদপ্তরের অভিযান পরিচালনা করার কারণে কিছু কিছু বড় বাজারে কয়েক দিনের জন্য সরকারকর্তৃক আরোপিত নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি হলেও গ্রামের দৃশ্য পুরোপুরি উল্টো দেখা যায়। সরকারি ঘোষণার পর এক দিনের জন্যও গ্রামে ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দামে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হয়নি।
ডিমের দাম সরকারকর্তৃক হালিপ্রতি ৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হলেও গ্রামে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায়। এ রকম নির্ধারিত মূল্য থেকে আলু, পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি মূল্যে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া গ্রামে সবজির বাজারও লাগামহীন, বর্তমানে বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকার কমে কোনো সবজি ক্রয় করা যাচ্ছে না। মাছ–মাংস নয়, সবজি কেনাই এখন গ্রামের স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও শহরের সবজির বাজারে লাগামহীন দাম বেড়েছে। কিন্তু সর্বসাধারণের ভাবনার বিষয় শহরের তুলনায় গ্রামে সবজির দাম কম থাকাটা স্বাভাবিক কিন্তু গ্রামে সবজির দাম লাগামহীন কেন!
এ অবস্থায় গ্রামের মানুষ দায়ী করছে খাদ্য অধিদপ্তরে মনিটরিংয়ের অভাবকে। যদি গ্রামের বড় পাইকারি-খুচরা বাজারগুলোয় নিয়মিত খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক মনিটরিং করা হতো, তাহলে নিত্যপণ্যের দামের ভারসাম্য কিছুটা বজায় থাকত। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, গ্রামের স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনের দুর্ভোগ লাঘব করতে নিত্যপণ্যের দাম শিথিল করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিন।
শেখ আবদুল্লাহ
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ