বরিশাল শহরকে ঘিরে রেখেছে যে খাল, সেটি বরিশাল জেল খাল। এককালে এই খাল দিয়ে বড় বড় নৌযান চলত আর বর্তমানে এটি দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি কোনো খাল। যুগ যুগ ধরে দখল, ভরাট ও ময়লা–আবর্জনা ফেলার মহোৎসবে খালটি আজ মৃতপ্রায়। শহরের সব পয়োনিষ্কাশনের পানি এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কীর্তনখোলায় গিয়ে মেশে।
বর্তমানে খালটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে ঠিকমতো পানি যেতে পারছে না। শহরের সব বাজারের ময়লা এবং স্থানীয় লোকজন তাদের ময়লা-আবর্জনা এই খালে ফেলে। যার কারণে খালটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এখন বরিশালে অল্প একটু বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায়। এটির প্রধানত কারণ জেল খাল দিয়ে পানিনিষ্কাশন আগের মতো হয় না। খালটি বর্তমানে ময়লার ভাগাড়, তাই প্রচুর মশার উৎপাত বেড়েছে।
২০১৬ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খালটি বাঁচাতে পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং সেই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হয় কিন্তু পরবর্তীকালে আবার সেই খাল আগের মতো হয়ে যায়। সঠিক নজরদারি ও সচেতনতার অভাব এর জন্য দায়ী। খালটি খননের নামে গত বছর ছয় কোটি টাকা আসে পানি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কিন্তু নামমাত্র খাল খনন করে বাকি টাকা আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর পকেটে যায়।
চলতি বছরের ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বহু গাছপালা জেল খালে ভেঙে পড়ে অথচ ছয় মাস হয়ে গেছে, এখনো গাছগুলো অপসারিত হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি খালটিকে পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ না করে, তাহলে একটা সময় নগরবাসীকে পানিবন্দী ও রোগবন্দী জীবন কাটাতে হবে। অস্তিত্বের সংকটে পড়বে বরিশাল।
মুহম্মদ ইমন খন্দকার
শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়