শহর কিংবা গ্রাম সবখানেই এখন শব্দদূষণ। অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে মাইকে বিভিন্ন ধরনের প্রচার-প্রচারণা। রাজধানী ঢাকাসহ সকল শহর-গ্রামগঞ্জে বাসাবাড়িতে থাকা অবস্থায়, রাস্তাঘাটে চলাচল করার সময় শব্দদূষণের অত্যাচারে টেকা দায়। গ্রামে অতিরিক্ত প্রাইভেট ক্লিনিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পণ্য বিক্রি, মাছ-মাংসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রচারগাড়ি প্রতিনিয়ত ঘুরছে-ফিরছে। এ ছাড়াও গ্রামে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে কিশোর ও যুবক দ্বারা রাতভর উচ্চ আওয়াজে বক্সে গান বাজানোর বিষয়টি। বিভিন্ন দিবস ছাড়াও এই উচ্ছৃঙ্খলতা বেড়ে গেছে।
গাড়ির বিকট আওয়াজ, উচ্চ স্বরে অকারণে হর্ন বাজানো, বাড়ি নির্মাণের পাইলিং ও ইট ভাঙার আওয়াজ, জোরে মাইক বাজানো, জোরে টিভি বা মোবাইলে ভিডিও চালানো, সাইরেন ইত্যাদিতে শব্দদূষণের শেষ নেই। এতে যেমন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে অন্যদিকে বাসায় থাকা রোগীদের বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। আর যাদের হার্টের অসুখ আছে, তাদের তো করুণ অবস্থা। এতে সাধারণ মানুষের ঘুমের সমস্যা হচ্ছে।
শব্দদূষণের কারণে মানুষ দিনদিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। দিনের পর দিন শব্দদূষণের জ্বালা সহ্য করতে করতে মানুষের বধির হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিনিয়ত শব্দদূষণের ফলে আরও নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। যেমন: বুকের মধ্যে অস্বস্তি হতে পারে। মাথা ধরা, কান স্তব্ধ হয়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে বা রাগ বেড়ে যেতে পারে। যেহেতু কানের সঙ্গে চোখের সম্পর্ক আছে, তাই কানের ক্ষতি হলে চোখেরও ক্ষতি হতে পারে।
শব্দদূষণ একটা মারাত্মক দূষণ। শব্দদূষণ রোধ করতে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া ও প্রশাসনের তৎপরতা বৃদ্ধি করা অতি জরুরি। বৃক্ষ অনেকটা শব্দ প্রতিরোধ করে এর তীব্রতা কমিয়ে দেয়। তাই শহরাঞ্চলে ও গ্রামে রাস্তায় দুই পাশে বেশি বেশি বৃক্ষ লাগিয়ে শব্দের তীব্রতা কমানো যেতে পারে। আর সবচেয়ে বেশি দরকার জনসচেতনতা। মানুষকে বুঝতে হবে, জানতে হবে কোনটা খারাপ আর কোনটা ভালো।
আশপাশের পরিবেশ নির্মল রাখতে, প্রাণভরে অক্সিজেন গ্রহণ করতে ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে শব্দদূষণ রোধ করতে হবে। এটি দেশের ক্ষতি, দশের ক্ষতি এবং সমগ্র পৃথিবীর ক্ষতি। তাই আমাদের সকলের উচিত নিজ থেকে সচেতন হয়ে শব্দদূষণ রোধ করা।
জি. বি. এম রুবেল আহম্মেদ
শিক্ষক ও সমাজকর্মী
মাদারগঞ্জ, জামালপুর